মণিপুরে অশান্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দিল অসম মণিপুর যুব সংগঠন (এএএমওয়াইএ)। এই সড়ক অসমের সঙ্গে মিজোরামকে সরাসরি যুক্ত করে। আগামী ২৩ জুন থেকে জাতীয় সড়কে অর্থনৈতিক অবরোধ শুরু হবে, জানিয়েছে এএএমওয়াইএ।
সম্প্রতি মণিপুরে কুকি, চিন, জো সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য ভিন্ন প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার যে দাবি উঠেছে, তাতে সমর্থন জানিয়েছে মিজো ন্যাশানাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)। তারই প্রতিবাদ স্বরূপ অর্থনৈতিক অবরোধের কথা ঘোষণা করেছে যুব সংগঠন। তারা ওই এলাকায় শান্তি স্থাপনের বৃহত্তর স্বার্থে এমএনএফ-কে সমর্থন তুলে নেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছে।
যুব সংগঠনের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় সংবিধানের তিন নম্বর ধারা (আর্টিকেল ৩) অনুযায়ী মণিপুরে চিন, কুকি, জো সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক প্রশাসনিক কাঠামোর যে দাবি উঠেছে, তাতে এমএনএফ-এর সমর্থন অযৌক্তিক। সংবিধানের ওই ধারা মণিপুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ১৯৪৯ সালে মণিপুর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে থেকেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্বারা তা স্বীকৃত। আমরা এমএনএফ-এর সিদ্ধান্তে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছি।’’
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জ়োরামথাঙ্গা রবিবার জানিয়েছেন, মণিপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ রাজ্যের পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং শান্তি স্থাপনে তাঁর সাহায্য চেয়েছেন। সেই সঙ্গে মিজোরামে বসবাসকারী মেইতেই সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার অনুরোধও করেছেন বীরেন।
তবে জাতীয় সড়কে যুব সংগঠনের অর্থনৈতিক অবরোধ চলাকালীন জরুরি পরিষেবায় ছাড় মিলবে। অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা, পরীক্ষার্থী বা চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ, বিয়ে বা অন্য ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের স্বার্থে মানবিকতার খাতিরে ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। হিংসার কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মণিপুরের অনেক বাসিন্দা ঘরছাড়া। কেউ সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে মণিপুরের পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে আরও জটিল হয়ে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy