অশান্তির প্রতিবাদে দিল্লিতে বিক্ষোভ। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
কুকিদের বার্ষিক কুট উৎসবের মধ্যেই মেইতেই বাহিনীর মোরে দখল, কুকি গ্রামের মহিলাদের ঘর ছেড়ে সেনা শিবিরে আশ্রয় নেওয়া, পুলিশের অস্ত্র ও গাড়ি লুট, ১০ কুকি বিধায়কের অবিলম্বে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করে স্মারকপত্র, একের পর এক উত্তেজক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়া— সব মিলিয়ে ক্রমেই ফের অশান্ত হচ্ছে মণিপুর।
শুক্রবার সকালে পশ্চিম ইম্ফলে মণিপুরের স্বঘোষিত ‘সুরক্ষা সেনা’ মেইতেই লিপুনের প্রধান প্রমোত সিংহের গাড়ির উপরে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীরা। এলোপাথাড়ি গুলিতে তাঁর গাড়ির কাচ, পাশের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাণে বাঁচেন প্রমোত।
মণিপুরের দুই মন্ত্রী ও বিজেপির সাত বিধায়ক-সহ মোট ১০ জন কুকি বিধায়ক অবিলম্বে মোরে থেকে মেইতেই বাহিনী সরানোর জন্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, ‘মণিপুর পুলিশ কমান্ডোরা কুকি গ্রামে তল্লাশির নামে লুট, অত্যাচার, মহিলাদের মারধর ও যৌন হেনস্থা করেছে। অনেক মহিলা হাসপাতালে ভর্তি। হত্যাকারী খোঁজার নামে অবিলম্বে এই লুণ্ঠনরাজ বন্ধ হোক।’ তাঁরা বলেন, সরকার ও রাজ্য পুলিশের প্রতি কুকিদের অবিশ্বাস আরও বাড়ছে। কেন্দ্র বলেছিল, তারা কুকি এলাকায় মেইতেই বাহিনী পাঠাবে না। তাই অবিলম্বে হামলাকারী পুলিশ বাহিনীকে সরিয়ে নিরপেক্ষ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হোক।’
মোরেতে তল্লাশি চালানোর পরে পুলিশ জানায়, সেখানে সংঘর্ষবিরতিতে থাকা ইউকেএলএফ ও কেএলএ কুকি জঙ্গিদের শিবির ফাঁকা। অধিকাংশ পুরুষ গ্রামছাড়া। জঙ্গিদের ধাওয়া করলে তারা গুলি চালিয়ে মায়ানমারের দিকে পালিয়েছে। জঙ্গিদের ব্যবহার করা বেশ কিছু অস্ত্র, গাড়ি, ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে।
এ দিকে ইম্ফলে মণিপুর রাইফেলসের শিবিরে ১ নভেম্বর রাতে হামলা চালিয়ে প্রায় ৭০০ জনতা প্রচুর অস্ত্র, গুলি ও বেশ কয়েকটি গাড়ি লুট করেছে। পুলিশ হামলাকারীদের ঠেকাতে গুলিও চালায়। তিন জন সিআরপি জওয়ান ঘটনায় জখম হয়েছেন। কুকিদের দাবি, ওই সব গাড়ি করে মেইতেই সশস্ত্র বাহিনীকে মোরের দিকে আসতে দেখা গিয়েছে।
টেংনাওপাল জেলার কুকি সংগঠন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে স্মারকপত্র পাঠিয়ে অভিযোগ তুলেছে, পুলিশের পোশাক পরে, পুলিশেরই অস্ত্র নিয়ে আরাম্বাই টেঙ্গল ও মেইতেই লিপুন
কুকিদের গ্রামে হামলা চালাচ্ছে। তাদের দাবি, ‘এসডিপিও সি আনন্দ কুমার স্নাইপারের গুলিতে মারা গিয়েছেন বলে ভুয়ো অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আসল কারণ ভিন্ন। পুলিশ ইস্টার্ন শাইন স্কুলের মাঠে হেলিপ্যাড তৈরির চেষ্টা করলেও এলাকাটি সীমান্তের একেবারে কাছে হওয়ায়
বিএসএফ বাধা দেয়। পুলিশ ও বিএসএফের মধ্যে তর্কাতর্কির পরে তারা একে অন্যের দিকে গুলিও চালায়।’ যদিও স্নাইপারের গুলিতে আনন্দের মৃত্যু হয়নি— এমন কোনও কথা এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়নি। স্মারকপত্রে আরও বলা হয়, ‘এমন
অরাজক, আইনের শাসনহীন সরকারের অধীনে থাকা সম্ভব নয়। কুকিদের জীবন ও অধিকার রক্ষা করতে
পৃথক প্রশাসন ঘোষণা করা হোক। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে প্রত্যাহার করা হোক মেইতেই বাহিনী।’
আজ আসাম রাইফেলসের আইজি কনফারেন্সে ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি সি নায়ার মণিপুরের পরিস্থিতির কথা তুলে বলেন, “মণিপুরের এই অশান্ত পরিস্থিতিতে ভারত-মায়ানমার সীমান্তের সুরক্ষা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসাম রাইফেলস যে ভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, তা প্রশংসনীয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy