বিক্ষোভে মণিপুরের কুকি মহিলারা। ছবি: সংগৃহীত।
মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকার জেলাগুলিতে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা ‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ (আফস্পা) ফেরানোর দাবি তুললেন কুকি মহিলাদের একাংশ। রাজ্যে ১৩ দিনের সাময়িক শান্তির পর শুক্রবার সকালে মণিপুরের উখরুল জেলায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গ্রামরক্ষী বাহিনীর তিন সদস্য মারা যান। নিহত তিন জনই কুকি গোষ্ঠীভুক্ত বলে জানা যায়। শুক্রবার বিকেল থেকেই ওই তিন জনকে খুনের প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের বিচার চেয়ে কাংপোকপি জেলায় ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক কুকি মহিলা। এর ফলে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে যায় একের পর এক গাড়ি।
রাস্তায় নেমে কেবল বিক্ষোভ দেখানোই নয়, কুকি-জ়ো গোষ্ঠীর একটি সংগঠন ‘কমিটি অফ ট্রাইবাল ইউনিটি’ (সিওটিইউ) কেন্দ্রের কাছে মণিপুর উপত্যকার সব জেলাতেই আফস্পা ফেরানোর দাবি তুলেছে। এর পাশাপাশি, সংগঠনটির মণিপুরের কুকি এবং নাগা অধ্যুষিত পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তায় আবারও আসাম রাইফেলসকে মোতায়েন করার দাবি করেছে। কুকিদের একাংশের বক্তব্য, আসাম রাইফেলস সরে যাওয়ার কারণেই উখরুলে তিন জন কুকিকে হত্যা করতে পেরেছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাচক্রে, আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে কুকিদের প্রতি পক্ষপাতমূলত আচরণ করার অভিযোগ তুলেছে মেইতেইরা।
গত মার্চ মাসে উপত্যকার ১৯টি থানা থেকে বিতর্কিত আফস্পা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। কুকিদের দাবি, রাজ্যের বাকি অংশের মতো ওই ১৯টি থানাতেও সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বলবৎ থাকুক। উপত্যকা অঞ্চলে মূলত মেইতেইদের বাস, যাদের সঙ্গে কুকিদের সংঘাতের ফলেই প্রায় চার মাস ধরে উত্তপ্ত রয়েছে মণিপুর।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy