আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা মণিপুরে। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের পাহাড়ি এলাকাগুলিতে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল মণিপুর সরকার। ১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ছ’মাস এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আফস্পা-তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে ইম্ফল উপত্যকার মেইতেই জনগোষ্ঠী প্রভাবিত ১৯টি থানা এলাকাকে। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই বেছে বেছে কুকি-জ়ো জনজাতি প্রভাবিত পাহাড়ি এলাকাগুলিতে আফস্পা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মণিপুরের বিজেপি সরকার।
কয়েক সপ্তাহ আগে কুকি-জ়ো জনজাতির সংগঠন ‘কমিটি অফ ট্রাইবাল ইউনিটি’ (সিওটিইউ) কেন্দ্রের কাছে ইম্ফল উপত্যকার সব জেলাতেই আফস্পা ফেরানোর দাবি তুলেছিল। এর পাশাপাশি, সংগঠনটির মণিপুরের কুকি এবং নাগা অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলের নিরাপত্তায় আবার অসম রাইফেলস মোতায়েনের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু মেইতেই প্রভাবিত মণিপুর সরকার সেই দাবি কার্যত অগ্রাহ্য করল।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবিলার জন্য সেনাবাহিনীর হাতে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দিতে ১৯৫৮ সালে আফস্পা আইন জারি করেছিল কেন্দ্র। গত বছরের গো়ড়া পর্যন্ত উত্তর-পূর্বে এখন গোটা অসম, নাগাল্যান্ড, রাজধানী ইম্ফল বাদে মণিপুরের বাকি এলাকা এবং অরুণাচলের তিন জেলায় আফস্পা বলবৎ ছিল। এর পর ধাপে ধাপে অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের পর্ব শুরু করে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
২০২২ সালের এপ্রিলে অসমের ২৪টি জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল ওই আইন। এর পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফরে গিয়ে বলেছিলেন, “অসম তথা উত্তর-পূর্বে নাশকতা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। উন্নত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তাই অসমের অধিকাংশ জেলা, নাগাল্যান্ড, এবং মণিপুরের বিভিন্ন অংশে আফস্পা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বের যে সব এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বা নাশকতার সমস্যা নেই, সেই এলাকাগুলি থেকে পর্যায়ক্রমে আফস্পা তুলে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু মণিপুরে হিংসা পরিস্থিতি পুরো ‘অঙ্ক’ বদলে দিয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সম্মতি নিয়ে অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডের কিছু এলাকায় আফস্পা পুনর্বহাল করেছিল। এ বার একই পথে হাঁটল মণিপুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy