মণিপুরে গত ১০ মাসের গোষ্ঠীসংঘর্ষের ঘটনায় ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা অন্তত ১,৫৫৫। এ ছাড়া, হিংসাপর্বে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ২৮ জন। মঙ্গলবার এই তথ্য দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ।
মণিপুর পুলিশের রেকর্ড বলছে, গত বছরের ৩ মে থেকে হিংসাপর্ব শুরুর পরে সে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় ৬৩টি ‘নিখোঁজ’ ডায়েরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী কংগ্রেস বিধায়ক কে মেঘচন্দ্রের প্রশ্নের জবাবে বীরেনের মন্তব্য, ‘‘নিখোঁজদের মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তা ছাড়া, ন’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
বীরেন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আহতদের মধ্যে ১,৪২৯ জন সাধারণ নাগরিক। তা ছাড়া, মণিপুর পুলিশের ৮৮ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ২৮ জন রয়েছেন।’’ আহতদের মধ্যে ৩৩৪ জনের শরীরে বুলেটের আঘাত মিলেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, মণিপুর সরকার আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেছে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে।
মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘাতের সূচনা হয়েছিল। অশান্তি ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলসকে। তার পরেও হিংসা থামেনি।
আরও পড়ুন:
এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠীহিংসার জেরে উত্তর-পূর্বের ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ। ধ্বংস হয়েছে বহু বাড়িঘর। মণিপুর বিধানসভা মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বীরেন বলেন, ‘‘আমাদের সরকার ১৩৯টি পরিবারকে বাড়ি তাদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতের জন্য ৫০ শতাংশ অগ্রিম টাকা দিয়েছে। ৪৭২টি পরিবারের জন্য নতুন বাড়ি তৈরির অনুদান মঞ্জুর করা হয়েছে।’’