বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের বাইরে শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি চলার ঘটনায় এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কেন সুখবীরের উপর হামলা চালানো হল, জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই আবহেই এ বার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা গেল, শুধু বুধবার নয়, মঙ্গলবারও দীর্ঘ ক্ষণ স্বর্ণমন্দিরের সামনে ঘোরাঘুরি করেছিলেন ধৃত।
বুধবারই জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম নারায়ণ সিংহ চৌরা। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার বাসিন্দা তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, নারায়ণ একজন প্রাক্তন খলিস্তানি জঙ্গি। এর আগেও একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। নারায়ণের নামে জেল ভেঙে পালানোর ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে। তবে কেন হঠাৎ সুখবীরের উপর হামলা চালালেন তিনি, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন:
অমৃতসরের পুলিশ কমিশনার গুরপ্রীত সিংহ ভুল্লর বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবারের ঘটনায় সাদা পোশাকে থাকা পুলিশকর্মীদের তৎপরতায় বেঁচে যান সুখবীর। পরে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা যায়, মঙ্গলবারও ওই চত্বরে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন ওই বৃদ্ধ। পরনে ছিল ঘিয়ে রঙের সোয়েটার। এর পরেই মন্দিরের নিরাপত্তায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অকালি দলের প্রবীণ নেতা তথা পঞ্জাবের প্রাক্তন মন্ত্রী বিক্রম সিংহ মাজিথিয়া। বিক্রমের প্রশ্ন, পুলিশ যদি এতই সজাগ ছিল, তা হলে মঙ্গলবারই কেন ওই সন্দেহভাজনকে আটক করা হল না? তবে ওই ঘটনার পরেই স্বর্ণমন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মোতায়েন হয়েছেন প্রায় ১৭৫ পুলিশকর্মী।
আরও পড়ুন:
বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের প্রবেশপথের ঠিক সামনেই অকালি দলের প্রধানকে লক্ষ্য করে গুলি চালান এক প্রৌঢ়। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় গুলি। অল্পের জন্য বেঁচে যান সুখবীর।মূহূর্তে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। উপস্থিত মানুষজন ছুটে গিয়ে হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। হামলাকারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর পিস্তলটিও। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। ঘটনায় অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
২০১৫ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রামরহিমকে ‘অন্যায় ভাবে’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি সুখবীরকে দোষী সাব্যস্ত করে ‘সাজা’ শুনিয়েছিল অকাল তখ্ত। শিখ ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের সেই আদেশ শিরোধার্য করে মঙ্গলবারের পর বুধবার সকালেও ‘সাজা’ খাটতে ভাঙা পায়ে হুইলচেয়ারে চেপে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুখবীর।