প্রচণ্ড গরমে রাজধানীতে জলসঙ্কটও দেখা দিয়েছে। ছবি: রয়টার্স।
দিল্লিতে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। বুধবার দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তিনি মারা গিয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মৃতের জ্বর হয়েছিল। শরীরের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটে, যা স্বাভাবিকের থেকে ১০ ডিগ্রি বেশি। তিনি যে ঘরে থাকতেন, সেখানে পাখা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ছিল না। অতিরিক্ত গরমের কারণেই তাঁর শরীরের তাপমাত্রা অত বৃদ্ধি পেয়েছিল বলেও মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এর পর সোমবার গভীর রাতে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার হিট স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত ব্যক্তি বিহারের দ্বারভাঙার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। গ্রীষ্মকালে এ বছর দিল্লিতে এই প্রথম হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হল।
উল্লেখ্য, বুধবারই হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়েছে রাজধানীর তাপমাত্রা। দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছয় ৫২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও বটে। ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির মুঙ্গেশপুরের স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রে বুধবার এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও এর পরেই নড়েচড়ে বসে মৌসম ভবন। ওই আবহাওয়া কেন্দ্রের তাপমাত্রামাপক সেন্সর ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে মৌসম ভবন। ভূবিজ্ঞান মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “এখনই আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে দিল্লির তাপমাত্রা ৫২.৯ ডিগ্রি হওয়া কিছুটা অস্বাভাবিক। মৌসম ভবনের আধিকারিকদের এ বিষয়ে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।”
তবে দিল্লিতে তীব্র দহনজ্বালার মধ্যেই স্বস্তির খবরও দিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। তাদের পূর্বাভাস, বৃহস্পতিবার দিল্লির তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমতে পারে। বৃহস্পতিবার সারা দিনই দিল্লির আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে বলে জানানো হয়েছে। পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে আগামী ১ জুন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে। আগামী সোমবার এবং মঙ্গলবারের মধ্যে দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার দেশের রাজধানীর বিভিন্ন অংশে তাপপ্রবাহ চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
দিল্লির তীব্র গরমের হাত থেকে কচিকাঁচাদের রেহাই দিতে সব স্কুলকে ৩০ জুন পর্যন্ত গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গরমে বাতানুকূল যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতেও টান পড়েছে দিল্লিতে। সেখানে বিদ্যুতের চাহিদাও তুঙ্গে। এর ফলে লোডশেডিংয়ের সম্ভাবনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। তাপপ্রবাহ পরিস্থিতিতে মূলত বয়স্ক এবং শিশুদের সাবধানে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। দুপুরে যথাসম্ভব বাড়িতে থাকা, বেশি করে ওআরএস জাতীয় পানীয় খাওয়া, কাটা ফল বা অতিরিক্ত তেলমশলা দেওয়া খাবার না খাওয়ার উপরে জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
প্রচণ্ড গরমে রাজধানীতে জলসঙ্কটও দেখা দিয়েছে। দিল্লি জল বোর্ড (ডিজেবি) বুধবার ঘোষণা করেছে, জল অপচয় করলেই দু’হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে দিল্লিবাসীদের। ডিজেবির ঘোষণা করা এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল উপচে পড়লে, ব্যক্তিগত গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন ধুলে এবং নির্মাণ ও বাণিজ্যিক কারণে পানীয় জল ব্যবহার করলেই দিতে হবে জরিমানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy