Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: শুক্রবার রাস্তায় নেমে গোয়াবাসীর মনমেজাজ আর সমস্যা বোঝার কাজ শুরু করবেন মমতা

রাজ্যের রাজনৈতিক শিবির বলছে, উন্নয়ন, বৃদ্ধি এবং গণতন্ত্র— এই তিনটি ক্ষেত্রে দৃশ্যতই ধুঁকছে গোয়া।

স্বাগত: গোয়ার বিমানবন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতানেত্রীরা। বৃহস্পতিবার।

স্বাগত: গোয়ার বিমানবন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতানেত্রীরা। বৃহস্পতিবার। ছবি পিটিআই।

অগ্নি রায়
পানজিম শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫০
Share: Save:

‘গোয়েঞ্চি নভি সকাল!’ অর্থাৎ গোয়ায় নতুন ভোর।

ডোনা পাওলায়, গোয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে ঢোকার মুখটি যেন একফালি কলকাতা। দু’দিকে সারি দেওয়া তৃণমূলের প্রতীক সম্বলিত হোর্ডিং আর পতাকা। সঙ্গে উপরের স্লোগানটি। এই রাস্তা দিয়েই আড়াই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোয়া পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার রাস্তায় নেমে গোয়াবাসীর মনমেজাজ আর সমস্যা বোঝার কাজ শুরু করবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। তার আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন গোয়ার পরিস্থিতি নিয়ে। গোয়া তৃণমূলের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হল, “এটা সবে শুরু। নতুন ভোর গোটা রাজ্যের জন্যই আসতে বাধ্য। আসবে প্রকৃত উন্নয়ন, প্রকৃত বৃদ্ধি এবং গণতন্ত্র্।”

রাজ্যের রাজনৈতিক শিবির বলছে, উন্নয়ন, বৃদ্ধি এবং গণতন্ত্র— এই তিনটি ক্ষেত্রে দৃশ্যতই ধুঁকছে গোয়া। আড়ি পাতারও প্রয়োজন হচ্ছে না, এখানে ক্ষমতাসীন বিজেপি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ এতটাই। এই ক্ষোভের সুরাহা প্রথম বারের জন্য গোয়া এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে ফেলতে পারবেন, এমনটা রাজনৈতিক বাস্তবতা নয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে বিপুল ভাবে রুখে দেওয়ার পরে তাঁকে নিয়ে ধীরে ধীরে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন এখানকার কতিপয় মানুষ, সংগঠন, গোষ্ঠী। ভোটের এখনও যথেষ্ট দেরি। তৃণমূল আদৌ কতটা কামড় বসাতে পারবে গোয়ার গেরুয়া দুর্গে, তা-ও স্পষ্ট নয়। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর প্রথম সফরের মাধ্যমে এক নতুন পথ চলা শুরু হল, এমনটাই দাবি করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তাই দলের টুইট, “আজকের দিনটি ঐতিহাসিক!”

বৃহস্পতিবার রাতে দলের পক্ষ থেকে শুক্রবার মমতার ঠাসা কর্মসূচি প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে তার অনেকটাই রয়েছে পথে নেমে সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথোপকথন। তার সঙ্গে রাজ্যের প্রায় ৬২ শতাংশ হিন্দু জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে তৃণমূল নেত্রী এক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মন্দির দর্শন করবেন। করবেন সাংবাদিক সম্মেলনও।

যে হেতু এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও পরিকাঠামোই সে ভাবে তৈরি হয়নি, তাই গোটা বিষয়টি কড়া হাতে পরিচালনা করছে প্রশান্ত কিশোরের (পি কে) সংস্থা আইপ্যাক। পি কে নিজে গোয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে, গত চার দিন ধরে বসে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন। মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের তালিকা তৈরি, গোয়ার কোথায় কোথায় তিনি যাবেন, বিশিষ্ট জনদের সঙ্গে তাঁর আলাপাচারিতায় কাঁদের ডাকা হবে, সেগুলির পিছনে রয়েছে তাঁর মস্তিষ্ক। সেই পরিকল্পনার ফাঁক দিয়ে কোনও মাছি যাতে গলতে না পারে, সে দিকে কড়া নজর রাখছেন আইপ্যাকের কর্মীরা।

স্থির হয়েছে, শুক্রবার সকালে গোয়ার স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। তার পর পানজিমের বেতিমে মাছের বাজারে যাবেন। কথা বলবেন মৎস্যজীবী এবং মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে। এক ঘণ্টা সেখানে কাটিয়ে গোয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন। ফের বেরিয়ে মাঙ্গুয়েসি, মহালসা নারায়ণী এবং তপভূমি মন্দির দর্শন করবেন তৃণমূল নেত্রী। সন্ধ্যাবেলা এখানকার সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজ বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যান গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা লুইজ়িনহো ফেলেইরো, স্বাতী কেলকর, এন শিবদাসের মতো নেতারা। যান তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনও।

এখনও পর্যন্ত মমতার কর্মসূচিতে এখানকার ছোট দলগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের খবর নেই। এ ব্যাপারে আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির মতো (তিন জন বিধায়ক) দলকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়তে হলে তাদের দল ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। এই প্রস্তাবে রাজি নয় তারা। এ ব্যাপারে কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার ব্যাপারেই পাল্লা ভারি তাদের। এর আগে গোয়ায় এসে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম জানিয়েছিলেন, ছোট দলগুলিকে ছেড়ে রাখা যাবে না। কারণ ভোট কাছে চলে এলে তাদের বিজেপি কিনে নিতে পারে। ২০১৭ সালের নির্বাচনের পরে এ নিয়ে বিলম্ব করায় গোয়ার ছোট দলগুলি বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে। তবে মমতা মনে করেন, জোট করে ভোট করার পরে তারা যদি গোটা দলশুদ্ধ বেরিয়ে যায়, সেটা প্রবল সঙ্কট তৈরি করবে।

বাংলার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, “গোয়ায় মোট ১৪ লক্ষ ভোটার। তাঁদের মধ্যে কত জন চেনে তৃণমূল কংগ্রসকে? ওদের তো কোনও সংগঠন নেই। গোয়ায় তৃণমূলের জায়গা করতে গেলে আগে তো তৃণমূলকে কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ওখানে তৃণমূলকে কেউ চেনে না। আর নেতা-এমএলএদের কেনা? এ সব তো গোয়াতে কেনা যায়। মাল নিয়ে যান, গেলেই কিনতে পারবেন! দিদি ওখানে এত এত মাল নিয়ে যাচ্ছেন, বাংলা লুট করে টাকা ঢালছেন, সেই টাকায় নেতাদের কিনছেন। কিনুন। তাতে বিজেপিকে হঠানো যায় না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Goa TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy