নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে যাচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যাননি নীতি আয়োগের বৈঠকে। এ বার প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকেও যাচ্ছেন না। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে চিঠি লিখে মঙ্গলবার সে কথা জানিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা এত অল্প সময়ের নোটিসে সম্ভব নয়, তাই এই বৈঠকে তিনি যাচ্ছেন না— জানিয়েছেন মমতা।
আগামী কাল অর্থাৎ বুধবার সর্বদল বৈঠকটি হবে। গোটা দেশেই লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন একসঙ্গে করার বিষয়ে আলোচনা করতেই মূলত এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় যে দলগুলির প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, সেই দলগুলির প্রধানদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের মাধ্যমে আমন্ত্রণগুলি পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে তিনি জানিয়েছেন, যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই বৈঠক ডাকা হয়েছে, সেই বিষয় নিয়ে এ ভাবে আলোচনা সম্ভব নয়।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লিখেছেন— ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ঠিক মতো আলোচনা করা এত কম সময়ের নোটিসে সম্ভব নয়। মমতার ব্যাখ্যা, এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হলে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং দলের সদস্যদের সঙ্গে আগে কথা বলা দরকার, তাড়াহুড়ো করে এই বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। দেশের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র তৈরি করুন এবং তা সব রাজনৈতিক দলকে দিন, পর্যাপ্ত সময় দিয়ে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চান।’’ এই ভাবে এগোলেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত নীতি বা ব্যবস্থা প্রণয়নের বিষয়ে ভাল পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন।
প্রহ্লাদ জোশীকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: বিরাট চমক বাংলাকে! লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোদী সরকারের সঙ্ঘাত চরমে পৌঁছেছিল নির্বাচনের বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে বাংলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং কী ধরনের সাহায্য রাজ্যের প্রয়োজন, সে সব নিয়ে আলোচনার জন্য নরেন্দ্র মোদী ভোটের মাঝেই ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু মমতা সে সময় মোদীর সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। ভোট মেটার পরে নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন বলে প্রথমে জানিয়েছিলেন মমতা, পরে সে সিদ্ধান্তও বদলে ফেলেন, যাননি। তার পরে গরহাজির থাকেন নীতি আয়োগের বৈঠকে। ওই বৈঠকে গিয়ে কোনও লাভ হয় না, রাজ্যগুলির বক্তব্য তুলে ধরার জায়গা নীতি আয়োগে নেই, ওই আয়োগের ক্ষমতাও অত্যন্ত সীমিত, তাই বৈঠকে তিনি যাবেন না— জানিয়ে দেন মমতা। এ বার ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ডাকা সর্বদল বৈঠকেও তিনি অনুপস্থিত থাকছেন।
আরও পড়ুন: জাত তুলে কটাক্ষ! রবীন্দ্রভারতীতে পর পর ইস্তফা অধ্যাপকদের, সঙ্কট সামলাতে আসরে পার্থ
রবিবার সংসদে আর একটি সর্বদল বৈঠক হয়েছিল। তাতেও সভাপতিত্ব করেছিলেন নরেন্দ্র মোদীই। নির্বাচনের পরে নতুন করে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে প্রথামাফিকই ডাকা হয়েছিল ওই বৈঠক। তাতে তৃণমূলের তরফে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন যোগ দিয়েছিলেন। বাংলাকে যেন নিশানা না করা হয়— মোদীকে সে বৈঠকে এমনই বলেছিলেন সুদীপরা। আর মোদী বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কোনও রাজ্যকে নিশানা করার প্রশ্নই ওঠে না বরং তৃণমূল চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান তিনি। কিন্তু তৃণমূল চেয়ারপার্সন মঙ্গলবার যে চিঠি পাঠালেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে, তাতে তিনি প্রচ্ছন্ন ভাবে আরও এক বার বুঝিয়ে দিলেন, মোদীর মুখোমুখি হতে এখনও তিনি নারাজই।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy