(বাঁ দিকে) জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা এবং কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বেলাগাম মন্তব্যে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার বিরুদ্ধে তাঁর টিপ্পনী সাংবিধানিক ওই পদের মর্যাদা হানি করেছে অভিযোগ করে দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের হয়েছে। এফআইআর-টি করেছে মহিলা কমিশনই। এর পরে সমাজমাধ্যমে রেখা শর্মার বিভিন্ন পোস্ট তুলে ধরে মহুয়া বলেছেন, ‘এমন এক জন মানুষ বারে বারে অন্যের বিরুদ্ধে মানহানিকর ও অশালীন মন্তব্য করে গিয়েছেন। কমিশন তা হলে তাদের চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধেও এফআইআর করুক।’ মহুয়া তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, তিনি দিল্লি পুলিশকে ভয় পান না। আপাতত নদিয়ায় রয়েছেন তিনি। পারলে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাক দিল্লি পুলিশ।
লোকসভায় আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিবিড় সম্পর্ক নিয়ে বরাবর সরব ছিলেন মহুয়া। নির্বাচনের আগে মন্ত্রগুপ্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে বেনজির প্রক্রিয়ায় তাঁর সদস্যপদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তার পরে ফের কৃষ্ণনগর থেকে জয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছেন মহুয়া। নতুন বিতর্কটিকে হাতিয়ার করে মহুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ফের তৎপর হয়েছে বিজেপি। মহুয়ার সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়ার দাবিতে বিজেপি নেতারা এ দিন সরব হয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে জখম মহিলাদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কোনও এক জন রেখার মাথায় ছাতা ধরে রয়েছেন। রেখা কেন নিজের ছাতা নিজে ধরেননি, তা নিয়ে নেটিজেনরা সরব হয়েছিলেন। সেখানেই মহুয়া মন্তব্য করেছেন, ‘ছাতা ধরবেন কী করে, উনি তো ওঁর প্রভুর পাজামা ধরেছিলেন!’ এই মন্তব্যকে রেখা অশালীন এবং তাঁর পদের মর্যাদাহানিকর বলে নিন্দা করেন। ক্রোধে ফেটে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। রেখা দাবি করেন, ভিড়ের মধ্যে পিছন থেকে কে তাঁর মাথায় ছাতা ধরেছিলেন, বা আদৌ ধরেছিলেন কি না— তিনি বুঝতেই পারেননি। কিন্তু তা নিয়ে এমন মন্তব্য এক জন সাংসদের! এর পরেই জাতীয় মহিলা কমিশন মহুয়ার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশে এফআইআর দায়ের করে।
সংসদে ভাল বক্তা হিসাবে সুনাম কুড়োলেও বেলাগাম মন্তব্যের জন্য বারে বারে বিতর্কে জড়িয়েছেন মহুয়া মৈত্র। দলের কর্মিসভায় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি দেখে তিনি তাঁদের
‘দু’টাকার সাংবাদিক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ দিনও তাঁর মন্তব্য অবাঞ্ছিত বলে মনে করছেন অন্য বিরোধী দলের কয়েক জন নেতা। তাঁদের কথায়, অন্য ভাবেও রেখার বিজেপি আনুগত্যের বিষয়টি তুলে ধরা যেত। এতে বিজেপিকেই সুবিধা করে দেওয়া হল।
কিন্তু মহুয়া এক্স-এ রেখার একের পর এক পুরনো পোস্ট তুলে ধরে দেখিয়েছেন, কী ভাবে বিজেপির ওই নেত্রী বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে, এমনকি মোহনদাস গান্ধীর নামেও আপত্তিকর ও কুরুচিকর মন্তব্য করে গিয়েছেন। সনিয়া গান্ধী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ পোস্ট দিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তাঁকে কোনও হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। তার নীচে রেখা শর্মা লেখেন, ‘অসুস্থতাটা ওঁর মাথায়, কোনও পাগলাগারদে ওঁকে নিয়ে যেতে বলুন।’ মোহনদাস গান্ধী সম্পর্কে রেখার পোস্ট— ‘যিনি নিজের ছেলের ভাল বাবা হতে পারেননি, তাকে কেমন করে আমরা জাতির জনক বলে ডাকি?’ আপ নেতা কুমার বিশ্বাস প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে বোন সম্বোধন করার পরে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন এক্স-এর পোস্টে দু’জনের পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মহুয়ার প্রশ্ন, জাতীয় মহিলা কমিশন কি রেখা শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর করছেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy