গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাষ্ট্রপতি শাসনের পথেই কি মহারাষ্ট্র? আপাতত সেই সম্ভাবনাই জোরদার হচ্ছে। মঙ্গলবার গোটা পরিস্থিতি জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। অন্য দিকে নিজের ব্রাজিল সফর পিছিয়ে দিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই বৈঠকের পরেই রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করে কেন্দ্র।
মহারাষ্ট্রে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সরকার গঠনের দাবিও কেউ করেনি। সাংবিধানিক রীতি মেনে রাজ্যপাল প্রথমে বৃহত্তম দল বিজেপিকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তাঁদের সময় দেওয়া হয় তিন দিন। কিন্তু নির্ধারিত সেই সময়ের পরে বিজেপি জানিয়ে দেয়, তারা সরকার গঠনের দাবি করবে না। এর পর দ্বিতীয় বৃহত্তম দলকে সরকার গঠনের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দেন রাজ্যপাল। শিবসেনা সরকার গঠনের দাবি করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকার গড়তে পারেনি। এর পর তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে এনসিপি-কে ডাকেন রাজ্যপাল। তাদের দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ রাত সাড়ে ৮টায়। সেই সময়সীমার মধ্যে এনসিপি সরকার গঠনের জন্য অন্তত ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন জোগাড় করতে না পারলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে সুপারিশ করবেন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি।
Raj Bhavan Press Release 12.11.2019 3.16 PM pic.twitter.com/qmlQA6ghBR
— Governor of Maharashtra (@maha_governor) November 12, 2019
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় হবে কি না, তা নিয়ে চরম সংশয়ে সেনা-এনসিপি জোট। নীতিগত ভাবে শিবসেনা-এনসিপি জোটকে সমর্থনের কথা জানিয়েও এখনও সমর্থনপত্র দেয়নি কংগ্রেস। উল্টে এখনও দলের অন্দরে টানাপড়েন। দফায় দফায় বৈঠক, আলোচনা, পর্যালোচনার পরেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি হাত শিবির। আজ সকালেও ১০ জনপথে সনিয়া গাঁধীর বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। তার পরে শরদ পওয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন সনিয়া নিজে। কিন্তু তাতেও জট খোলেনি। সমর্থনের প্রশ্নে এবার মুম্বইয়ের পথে কংগ্রেসের নেতারা। পওয়ারের সঙ্গে কথা বলার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে দল।
আরও পড়ুন: টানটান নাটক মহারাষ্ট্রে, পওয়ারের সঙ্গে কথা সনিয়ার, মুম্বই যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা
কংগ্রেস সূত্রে খবর, শুধুই সমর্থনের প্রশ্ন নয়। এনসিপি ইউপিএর শরিক। ফলে পওয়ারের দলকে সমর্থনে তেমন আপত্তি নেই। কিন্তু সমস্যা শিবসেনাকে নিয়ে। সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলের সঙ্গে হাত মেলানো ভবিষ্যতের পক্ষে কতটা ক্ষতি হতে পারে দলের, এই নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত দল। আবার এখন সরকার গঠন করলেও পাঁচ বছর সেই সরকার টিকবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরেই। আবার সরকারে গেলে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি কী হবে, তা নিয়েও কাটাছেঁড়া চলছে। ফলে সমর্থনের প্রশ্নে এত তাড়াতাড়ি কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের ঢেউ ঝাড়খণ্ডে! একা লড়ার ঘোষণা এলজেপির, ভাঙনের মুখে এনডিএ
অথচ কংগ্রেস ছাড়া সরকার গঠন অসম্ভব। শিবসেনা-এনসিপির কাছে ম্যাজিক ফিগারের জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৫ বিধায়ক নেই। বাইরে থেকে হোক বা সরকারে থেকে হোক, কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া বিধায়ক সংখ্যা জোগাড় করাও সম্ভব নয় দুই দলের পক্ষে। আর সেই কংগ্রেস ক্রমাগত সময় নিয়েই চলেছে। ফলে সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্র রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy