২০০৮ সালে রামায়নে হনুমানের চরিত্রে অভিনয় করেন বিক্রম মস্তাল (বাঁ দিকে)। —ছবি : সংগৃহীত
কর্নাটকের ভোটে নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বজরংবলীকে অপমান করার অভিযোগ তুলেছিলেন। মধ্যপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেস নেতা কমল নাথ ‘বজরংবলী’-কেই বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়ে দিলেন। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহানের বিরুদ্ধে হনুমানের চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা বিক্রম মস্তালকেই প্রার্থী করলেন কমল নাথ।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন ঘোষণা এবং বিজেপি অধিকাংশ আসনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করে দিলেও কংগ্রেস পিতৃপক্ষ বা শ্রাদ্ধপক্ষের অশুভ সময় কেটে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিল। দেবীপক্ষ শুরু হতেই রবিবার সকালে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানার একগুচ্ছ আসনের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে। তিন রাজ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিরা ভোটে লড়ছেন। মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ ছিন্দওয়াড়া থেকে ভোটে লড়বেন। ছত্তীসগঢ়ের প্রদেশ সভাপতি দীপক বৈজ এবং তেলঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডি সাংসদ হলেও বিধানসভা ভোটে লড়বেন।
বিজেপির মোকাবিলায় মধ্যপ্রদেশে এ বার প্রথম থেকেই হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করেছেন কমল নাথ। নিয়মিত মন্দিরে পুজো দেওয়া, নানা ধর্মগুরুর আশ্রমে যাওয়া, কিছুই বাদ দিচ্ছেন না তিনি। হিন্দুদের আস্থা মেনে তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, দেবীপক্ষ শুরু না হলে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে না। শিবরাজের বিরুদ্ধে তুরুপের তাস তাই লুকনোই ছিল। কমল নাথ বরাবরই নিজেকে হনুমান-ভক্ত বলে পরিচয় দেন। কিন্তু শিবরাজ কয়েক মাস আগে তাঁর গড়েই বিরাট হনুমান মন্দির তৈরির প্রকল্প নিয়েছেন। কমল নাথ রামায়ণের হনুমানকেই শিবরাজের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছেন। তবে রামানন্দ সাগরের রামায়ণ ধারাবাহিকের হনুমান চরিত্রের অভিনেতা দারা সিংহ নন। তিনি তো প্রয়াত। রামানন্দের ছেলে আনন্দ সাগরের রামায়ণ ধারাবাহিকের হনুমান চরিত্রাভিনেতাকে প্রার্থী করেছেন তিনি। প্রয়াত অর্জুন সিংহের ছেলের পাশাপাশি রাজ্যের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ, কান্তিলাল ভুরিয়ার ছেলেদেরও প্রার্থী করা হয়েছে। অথচ প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই রটে যায়, দিগ্বিজয় তাঁর পছন্দের নেতাদের প্রার্থী করা হয়নি বলে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। দিগ্বিজয়ের অভিযোগ, বিজেপি তাঁর নামে লেখা চিঠি জাল করেছে।
পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে জিতে কমল নাথের নেতৃত্বে সরকার গড়লেও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলে সরকারের পতন হয়। কমল নাথ এ বার তার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে আসা নেতানেত্রীদেরও প্রার্থী করেছেন তিনি। ১৭ নভেম্বর রাজ্যে ভোটগ্রহণ। আজ ২৩০ আসনের মধ্যে ১৪৪টি আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে কমল বলেন, “আমাদের তালিকায় ৬৫ জনের বয়স ৫০ বছরের কম। ১৯ জন মহিলা। বিজেপির হারতে আর কিছু বাকি নেই। ওরা শুধু মুখে হারের কথা বলতে পারছে না।”
তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের প্রধান চ্যালেঞ্জ ক্ষমতাসীন বিআরএস-কে হারাতে না পারলেও শক্ত পরীক্ষার মুখে ফেলা। ১১৯টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ৫৮ জনের প্রথম প্রার্থী তালিকায় প্রভাবশালী রেড্ডি সম্প্রদায়ের নেতাদেরই ভিড় বেশি। বিআরএস-প্রধান, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও এ বার রেড্ডিদের দরাজ হাতে টিকিট বিলি করেছেন। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, রেড্ডিদের পরেই কংগ্রেসের প্রার্থীতালিকায় ওবিসি-দের সংখ্যা সবথেকে বেশি হতে চলেছে। ছত্তীসগঢ়ে আজ ৯০টি আসনের মধ্যে ৩০টি আসনে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, উপমুখ্যমন্ত্রী টি এস সিংহদেও প্রার্থীতালিকায় রয়েছেন। আট জন বর্তমান বিধায়ক এ বার টিকিট পাননি। কিছু ক্ষেত্রে অসন্তোষ থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রীকে ফের প্রার্থী করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy