শশী তারুরের সঙ্গে রাহুল গান্ধী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সংঘাতের মেঘ কেটে কংগ্রেসের অন্দরে কিছুটা হলেও সমন্বয়ের আলো।
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের ভোটার বা এআইসিসি-র প্রতিনিধির তালিকা প্রকাশের দাবিতে শশী তারুর, মণীশ তিওয়ারি, কার্তি চিদম্বরমের মতো দলের সাংসদরা সরব হয়েছিলেন। সাংগঠনিক নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে, চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত করায় সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করলেন।
কন্যাকুমারী থেকে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ আজ তামিলনাড়ু পেরিয়ে কেরলে ঢুকেছে। তারুরের লোকসভা কেন্দ্র তিরুঅনন্তপুরমের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে পদযাত্রা। তারুরও পদযাত্রায় যোগ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিজেপি রাহুলের টি-শার্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তারুর নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে নিশানা করেন। তাঁর অভিযোগ, টি-শার্ট বা ধর্মের প্রসঙ্গ টেনে মূল্যবৃদ্ধি-বেকারত্বের সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছেন, ধর্মীয় বিভাজন চাইছেন মোদী-শাহেরা।
তারুরদের দাবি ছিল, সভাপতি নির্বাচনে যে ৯ হাজার কংগ্রেস নেতা-কর্মী ভোট দেবেন, নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হোক। মিস্ত্রি জানিয়েছেন, যাঁরা কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে লড়তে চান, তাঁরা রাজ্যের প্রতিনিধিদের তালিকা প্রদেশ কংগ্রেস দফতরেই পেয়ে যাবেন। মনোনয়ন জমা দিতে সেখান থেকে ১০ জনের সমর্থন লাগবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে পুরো ৯ হাজার জন প্রতিনিধিদের তালিকায়ই এআইসিসি দফতর থেকে পাওয়া যাবে।
মিস্ত্রির চিঠি পেয়ে তারুর জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টা স্পষ্ট করে দেওয়ায় তিনি খুশি ও সন্তুষ্ট। তাঁর বক্তব্য, সাংগঠনিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠিক মতো হলে সংগঠনই মজবুত হবে। গুলাম নবি আজ়াদ কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে সভাপতি নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ তকমা দিয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এর পরে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে বিক্ষুব্ধ নেতা আনন্দ শর্মা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁকে সমর্থন করেন মণীশও। শর্মা এখন মুখ না খুললেও আজ মণীশও সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমার বা অন্য কারও ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্খা নয়, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাই আমার একমাত্র চিন্তা ছিল।’’
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের গোষ্ঠী জি-২৩-র মধ্যে থেকে তারুর সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তারুর আজ এ নিয়ে খোলসা করতে চাননি। মুচকি হেসে বলেছেন, ‘‘এই হাসিটাই আমার উত্তর। মনোনয়নের সময় এলেই সবটা জানা যাবে।’’ কংগ্রেস হাইকমান্ড অবশ্য এখনও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতকেই সভাপতির দায়িত্ব দিতে চাইছেন বলে সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে দলিত নেতা মুকুল ওয়াসনিককে এআইসিসি-তে মধ্যপ্রদেশের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়ায় তাঁর নাম ঘিরেও জল্পনা শুরু হয়েছে। মুকুলকে সংগঠনের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
তারুর, মণীশের মতো বিক্ষুব্ধ নেতাদের নরম সুর হওয়ায় কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রাহুল মাঠে নামায় দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মুছে যাবে। উল্টো দিকে, শাহ, স্মৃতি ইরানি থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা যে ভাবে রাহুলকে নিশানা করছেন, তাতে তাঁরাও যে চিন্তায় রয়েছেন, তা স্পষ্ট। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, বিজেপি নেতৃত্ব আতঙ্কিত হয়ে কখনও রাহুলকে হিন্দুবিরোধী বলে দেখাতে চাইছেন। কখনও তাঁর টি-শার্টের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তামিলনাড়ুতে রাহুল ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে পরিচিত এক পাদ্রির সঙ্গে দেখা করায় বিজেপি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কেরলে রাহুল সমাজ সংস্কারক আয়ানকলি, চট্টম্পি স্বামীকাল, শ্রী নারায়ণ গুরুর স্মারকে শ্রদ্ধা জানাবেন বলে ঠিক হয়েছে। তিরুঅনন্তপুরমে আদানিদের ভিঝিনজাম বন্দর ও রেলের সিলভার লাইন প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সঙ্গেও কথা বলবেন ওয়েনাডের সাংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy