প্রতীকী ছবি।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেই সংসদে কেন্দ্র জানিয়েছিল, কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাই ‘লাভ জেহাদে’র বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। আইনেও ‘লাভ জেহাদে’র অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তার পরেও শব্দটি নিয়ে হঠাৎই সক্রিয় হয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রী। যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ এবং মনোহরলাল খট্টরের হরিয়ানা।
বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণের প্রশ্নে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের উল্লেখ করে গত কালই এক সভায় ‘লাভ জেহাদে’র বিরুদ্ধে পরোক্ষে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তদের হুঁশিয়ারি দিয়ে উত্তর ভারতে হিন্দুদের শেষ যাত্রায় ব্যবহৃত ‘রাম নাম সত্য হ্যায়’ ধ্বনি তুলেছেন যোগী। তুলেছেন নয়া আইন আনার কথাও। এক দিন পরেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দিলেন, তাঁর সরকার ‘লাভ জেহাদ’ ঠেকাতে আইন আনার কথা ভাবছে। এমনকি কেন্দ্রও এ ব্যাপারে আইন আনার কথা ভাবছে বলে দাবি তাঁর।
দিন কয়েক আগে হরিয়ানার ফরিদাবাদের কাছে বল্লভপুরে একটি প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিকিতা তোমর নামের ২১ বছরের এক তরুণীকে কলেজের সামনেই গুলি করে খুন করা হয়। অভিযুক্ত দুই যুবকই ভিন্ন ধর্মের। তার পর থেকেই বিজেপি ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে ফের সক্রিয়। বল্লভগড়ের ঘটনার উল্লেখ করে রবিবার খট্টর বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় যেহেতু ‘লাভ জেহাদে’র সূত্র মিলেছে, তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির এ নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। এমন কোনও আইন আনা উচিত, যাতে এই ধরনের অপরাধ করে কেউ ছাড়া না পান।’’ তবে একই সঙ্গে নির্দোষদের যাতে হেনস্থা না হতে হয়, সে দিকেও নজর রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন খট্টর। অন্য দিকে রাজ্যের তরুণীদের বাঁচাতে ‘লাভ জেহাদ’ ঠেকানোর পক্ষে জোর সওয়াল করে এ নিয়ে আইন আনার কথা বলে হিন্দিতে টুইটও করেছেন হরিয়ানার মন্ত্রী অনিল ভিজ।
সাধারণত উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি ‘লাভ জেহাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করে। তাদের যুক্তি, মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে কৌশলে ধর্মান্তর করায়। বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার গত কয়েক বছর ধরেই তাদের নানা সংগঠনের মাধ্যমে ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে প্রচারের সুর চড়াচ্ছে। এ দিনই দিল্লিতে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের পথনির্দেশিকা বোর্ডে ওই নামের উপর ‘জেহাদি টেররিস্ট ইসলামিক সেন্টার’ পোস্টার লাগিয়ে দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা। পরে অবশ্য সেই পোস্টার সরানো হয়। তবে এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
যোগী আদিত্যনাথের জমানায় উত্তরপ্রদেশে, বিশেষ করে দলিত এবং নিম্নবর্ণের মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা প্রতিদিন বাড়ছে। শুধু গত দু’মাসে হাথরস, বলরামপুর-সহ রাজ্যে অন্তত ২০টি ক্ষেত্রে ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনা ঘটেছে। বিরোধী সমাজবাদী পার্টির নেতা রাম গোবিন্দ চৌধরির কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে যোগী শুধুই আইন করেছেন আর রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ধ্বংস হয়েছে। হরিয়ানায় মহিলাদের অবস্থা নিয়ে বহু দিন ধরেই সরব মহিলা সংগঠনগুলি। তাঁদের অভিযোগ, সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে চলা খাপ পঞ্চায়েতগুলির সিংহ ভাগই মহিলাদের সব রকম স্বাধীনতার বিরোধী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy