দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের বৈঠক। দিল্লিতে এআইসিসি সদর দফতরে। ছবি: কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডল থেকে।
বাংলায় কংগ্রেস কি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করবে? না কি থেকে যাবে কংগ্রেস-সিপিএম জোটই? না কি হবে ভিন্ন কিছু? ‘ইন্ডিয়া’য় বঙ্গ-জটিলতা লোকসভা ভোটের আগে এক ভিন্ন মাত্রায় বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতেই বুধবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন রাহুল গান্ধী। মতামত জানতে। এঁদের মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে রাহুল বা দলীয় হাইকমান্ডের যোগাযোগ রয়েছে নিয়মিত। বাকিদের মতামত শোনাটাই এআইসিসির কাছে মুখ্য ছিল। এই বৈঠকে নানা মতামত উঠে এসেছে প্রদেশ নেতাদের তরফে। বড় অংশ তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার পক্ষে নন বলে জানিয়েছেন। অনেকেই সিপিএমের সঙ্গে জোট রেখে দেওয়ার পক্ষে। কেউ তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার পক্ষে। তবে সকলেই একটা বিষয়ে একমত, হাইকমান্ড যা ঠিক করবে, তা-ই মেনে নেওয়া হবে। কংগ্রেস হাইকমান্ডের তরফে রাহুল ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন এআইসিসি সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক চেল্লা কুমার, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল-সহ কংগ্রেসের আরও কয়েক জন।
অধীর বৈঠকে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তিনি জিতে এসেছেন কখনও সিপিএম, কখনও তৃণমূল এবং বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে। আবারও কঠিন লড়াইয়ের জন্য তিনি প্রস্তুত। তবে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। কারণ, তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সংগঠনের যা ক্ষতি করেছে তা আর কেউ করেনি। অধীর দাবি করেন, মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জের মতো আসনে ভাল লড়াই দিতে পারবেন তাঁরা।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা এআইসিসি নেত্রী দীপা দাশমুন্সিও এই বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, ২০১২-১৩ সাল থেকে তৃণমূল যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে ভেঙে ছারখার করেছে, তাতে আবার তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়াই করলে তার বিরূপ প্রভাব কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মনে পড়তে পারে। তাঁর মতে, বরং বামফ্রন্ট বা সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে জোটের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনেক বেশি আন্তরিক থাকা উচিত। তা ছাড়া আগামী দিনে সংগঠন জোরদার করতে হলে তৃণমূল ছাড়াই বাংলায় কংগ্রেসের পথ চলা উচিত বলে দীপা মতপ্রকাশ করেন।
ভিন্ন মত পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সেবাদলের চেয়ারম্যান রাহুল পাণ্ডের। তিনি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে লোকসভা ভোটে লড়াই করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের সভাপতি আজহার মল্লিক আবার জোটের সিদ্ধান্ত নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে পরাস্ত করতে শীর্ষ নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা তিনি মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের এই যুবনেতা।
কেউ ‘একলা চলো’, আবার কেউ বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট অক্ষত রাখার পক্ষে বৈঠকে সওয়াল করেছেন। নেতৃত্বের কথা শোনার পর রাহুল বৈঠকে জানিয়েছেন, বাংলার জোট নিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেনি। তৃণমূল নেতৃত্বকে কোনও কথাও দেওয়া হয়নি। দলের প্রদেশ নেতৃত্ব কী চাইছেন সে কথা না-জানা পর্যন্ত তারা কোনও সিদ্ধান্তের পক্ষপাতী নন। সেই কারণেই প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠক। রাজ্য নেতৃত্বের সার্বিক মতামতকে উপেক্ষা করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ‘ইন্ডিয়া’র শেষ বৈঠকের আগে রাহুল ফোন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয় দু’জনের। ‘ইন্ডিয়া’র গত মঙ্গলবারের সেই বৈঠকে মমতা ডিসেম্বরের মধ্যে আসন সমঝোতা প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বলেন। কংগ্রেসও তা মেনে নেয়। তার পরেই বাংলার নেতাদের ডেকে পাঠায় কংগ্রেস হাইকমান্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy