Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

গরিব, কিসান ছাপিয়ে মোদীর মুখে শুধুই ‘মোদী’!

২৭ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। এই সময়ের মধ্যে দেশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর করা ৭০টি সভার মধ্যে ৩৫টি সভা বেছে সমীক্ষা চালানো হয় বলে ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০৬:৪৯
Share: Save:

মোদীর মুখে মোদীর নাম। এক বার, দু’বার নয়, বারবার। তাতেই তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক।

মাসখানেকের সময়সীমায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৩৫টি সভা শুনে একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, সব বক্তৃতা মিলিয়ে মোদী যে শব্দটি সব চেয়ে বেশি বার উচ্চারণ করেছেন তা হল, ‘মোদী’! সংখ্যাটা— ১৭৬। এ বার তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

২৭ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। এই সময়ের মধ্যে দেশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর করা ৭০টি সভার মধ্যে ৩৫টি সভা বেছে সমীক্ষা চালানো হয় বলে ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি। তাতেই এই তথ্য মিলেছে বলে জানানো হয়েছে। ‘মোদী’র পরে যে শব্দটি প্রধানমন্ত্রী সব চেয়ে বেশি বার বলেছেন, তা হল ‘গরিব’। তিনি ‘গরিব’ বলেছেন ১৭৩ বার। ‘কিসান’ বলেছেন ১২৪ বার। সন্ত্রাস অর্থে ‘আতঙ্ক’ বলেছেন ১২৩ বার।

তবে ‘গরিব’, ‘কিসান’কে ছাপিয়ে মোদীর মুখে এত বার ‘মোদী’ উচ্চারণের তথ্য সামনে আসতেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম সম্প্রতি টানা টুইট করে মোদীর এই ‘অভ্যাস’-কে ‘একঘেয়ে ও ক্লান্তিকর’ বলে কটাক্ষ করেছেন। টুইটে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘নিজের কথা ছাড়া আর অন্য কিছু নিয়েই কি মিস্টার মোদীর কিছু বলার নেই? একটা নির্বাচনী সভায় আর কত বার মোদী নিজের নাম বলবেন?’’

এমন ‘স্বভাব’-কে কী বলা হয়, টুইটে তা-ও বলেছেন চিদম্বরম। তাঁর কথায়, ‘‘মিস্টার মোদীর কথা বলার ভঙ্গিকে বলা হয় ‘ইলিইজ়ম’। এই শব্দটা তেমন পরিচিত নয়, কারণ খুব কম মানুষের মধ্যেই এমন বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়।’’ কথা বলতে গিয়ে বারবার নিজেকে ‘তিনি’ বলে থার্ড পার্সন বা ‘তৃতীয় পুরুষে’ উল্লেখ করার অভ্যাসকেই ‘ইলিইজ়ম’ বলা হয়। চিদম্বরমের কথায়, ‘‘ইলিইজ়ম অস্বাভাবিক আচরণ কি না, তা নিয়ে বহু গবেষণা রয়েছে। তবে অস্বাভাবিক না হলেও নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এমন আচরণ খুব কম দেখা যায়।’’

তবে বিজেপি অবশ্য এমন আক্রমণকে আমল দিতে চাইছে না। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হয়েছে, কংগ্রেসের মোদী-আতঙ্কই চিদম্বরমের এমন কথার কারণ। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ সরকারের প্রধান হলেন মোদী। মোদী একটা ব্র্যান্ড। সেই মোদী সরকারকে ফের জেতানো হবে কি না, সেই প্রশ্নেই ভোট হচ্ছে। সমস্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীও তাই বারবার মোদীর কথাই বলছেন। মোদী নিজেই বা তার ব্যতিক্রম হবেন কেন?’’

কেবল বারবার নিজের নাম বলাই নয়, বিতর্ক হয়েছে মোদীর অন্য দাবি নিয়েও। অভিনেতা অক্ষয়কুমারের সঙ্গে ‘অরাজনৈতিক’ সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী জানান তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে অবধি নিজের কাপড়চোপড় নিজেই কাচতেন। তার পরেই একটি পুরনো খবর তুলে ধরে সেই বক্তব্যের সমালোচনা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই খবর অনুযায়ী, ২০১৭ সালেই মারা যান চাঁদ মহম্মদ ধোবি, যিনি একসময় নরেন্দ্র মোদীর কাপড় কাচতেন বলে পরিচিত ছিলেন।

সেটা ১৯৭০-এর দশক। মোদী তখন গুজরাতের গোধরায় আরএসএসের প্রচারক হিসেবে কাজ করতেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে গোধরায় গিয়ে তিনি চাঁদ মহম্মদের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। সেই খবরই তুলে দিয়ে অসম কংগ্রেসের তরফে মোদীকে বিঁধে টুইট করা হয়। দাবি করা হয়, মোদীর নিজের কাপড় নিজে কাচার দাবি আদৌ ঠিক নয়।

এর পাল্টা যুক্তিও অবশ্য এসেছে টুইটারে। তাঁদেরই এক জনের বক্তব্য, ‘‘চাঁদ মহম্মদ হয়তো কেবল মোদীর বিছানার চাদর বা পর্দা কাচতেন। তাই ওই খবর পড়ে মোদী নিজের কাপড় নিজে কাচতেন না, তা বলা যাবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy