‘ঢিনচ্যাক পূজা’র গানের ভিডিয়োর একটি দৃশ্য।
ভোটের প্রচারে গানকে বরাবরই ছিল হাতিয়ার করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এ বারের ভোটেও তা দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক দলের পরিসরের বাইরেও ইউটিউবারদের গানেও শোনা যাচ্ছে রাজনীতির কথা।
গানের সুরে রাজনীতির সেই ভাষ্যে যেমন আসছে ‘অচ্ছে দিন’, বা ‘বিকাশ’, অর্থাৎ উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন, তেমনই আসছে গোরক্ষকদের হাতে গণপিটুনিতে খুনের মতো বিষয়।
রফি-আশার কালজয়ী ডুয়েট ‘অভি না যাও ছোড় কর’-এর সুরে প্যারডি করেছেন তরুণ ইউটিউবার পূজান সাহিল। সেই গানে বিজেপিকে কটাক্ষ করে সরকার ছেড়ে যাওয়ার আবেদন করে বলা হচ্ছে, ‘অভি তো যাও ছোড় কর’। বিজেপি সরকারের আমলে বারবারই উঠেছে গোরক্ষকদের হাতে ‘মব লিঞ্চিং’, অর্থাৎ গণপিটুনিতে মানুষ খুনের অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গেই সাহিলের গানের কথায় আছে, ‘অপনা ইয়ে হিন্দুস্তান, না বন যায়ে লিঞ্চিস্তান’।
স্বঘোষিত গোরক্ষরাই গণপিটুনিতে পেহলু খানকে খুন করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল রাজস্থানে। সেই ঘটনার কথা, সেই ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতির কথা এসেছে আমির আজিজের ‘ব্যালাড অফ পেহলু খান’ গানে। গানের ভিডিয়োয় নির্মম বাস্তবের ছবি ধাক্কা দেয়। আমির বলছেন, ‘‘গানে আমি কোনও রূপক ব্যবহার করিনি। যা ঘটনা ঘটেছিল ও তার পরে যা যা আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি তারই ধারাভাষ্য দিয়েছি।’’
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আমির আজিজ এখন পেশাদার অভিনেতা। ভোটের আগে তৈরি করা তাঁর গান ‘অচ্ছে দিন ব্লুজ’ও ছড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপাতত মুম্বইনিবাসী আমির বলছেন, ‘‘গান যে আমার প্যাশন ছিল তা বলতে পারব না। তবে যে সময়ের, যে রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, সেই প্রেক্ষিতে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার প্রয়োজনে গানকে বেছেছি। সেই গান জনপ্রিয় হল কি না, তা নিয়ে আমি ভাবি না।’’
জনপ্রিয়তার জোয়ারে অবশ্য ভেসেছিলেন ইউটিউবার ‘ঢিনচ্যাক পূজা’। বছরখানেক আগে পূজা নিজের তৈরি ভিডিয়ো ‘সেল্ফি ম্যায়নে লে লি আজ’ ইউটিউবে আপলোড করতেই নিমেষে ভাইরাল হয়। ভোটের বাজারে সেই পূজার মুখেও রাজনৈতিক উচ্চারণ। তাঁর নতুন গান ‘বিকাশ পুছ রাহা হ্যায়-তে পূজা স্পষ্টই প্রশ্ন করছেন, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও নানা বিষয়ে কেন কেবল বিরোধীদের দায়ী করা হচ্ছে। ভিডিয়োতে সাদা পাঞ্জাবিতে ‘বিপক্ষ’ লেখা এক কিশোর, আর তার পাশে শাড়ি পরে এক কিশোরী— এই দু’জনকে দেখে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কথাও মনে হতে পারে। ইউটিউবে সাড়ে চার লক্ষ সাবস্ক্রাইবার থাকা পূজার এই গানের ভিউ সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ৬৩ হাজার ছুঁয়েছে।
প্যারডির বাজার জমজমাট ভোজপুরি গানেও। তার হদিস মিলছে বিহারের রাজনীতিতে। ভোজপুরি ভাইরাল গান ‘ঠিক হ্যায়’-এর প্যারডি করে ব্যবহার করছে শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই। বিজেপি বানিয়েছে, ‘‘নুন-রোটি খায়েঙ্গে, মোদীজি কো জিতায়েঙ্গে, ঠিক হ্যায়?’’। একই গানের সুরে সিপিআই প্রার্থী কানহাইয়া কুমারের সমর্থনে শোনা যাচ্ছে, ‘‘চোর হ্যায় চৌকিদার ভইল, আম্বানীকে ইয়ার ভইল, নীরব-মাল্য দিনেমে ফারার ভইল- ঠিক হ্যায়?’’ তাদের স্লোগান, ‘‘ঝাঁসে মে (মিথ্যে কথায়) না আয়েঙ্গে, কানহা কো জিতায়েঙ্গে!’’ আমিরের মতে, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলির পরিসরের বাইরেও সাধারণ মানুষের আলোচনাও রাজনৈতিক বয়ানের জন্ম দেয়। এই গানগুলিতে হয়তো তারই প্রকাশ দেখা যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy