ভোপালে বিজেপি দফতরে সাধ্বী প্রজ্ঞা। বুধবার। ছবি: পিটিআই
গেরুয়া সন্ত্রাস প্রশ্নে বিজেপির বিরুদ্ধে সব চেয়ে সরব তিনি। মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে সেই কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহের বিরুদ্ধে গেরুয়া সন্ত্রাসের অন্যতম মুখ সাধ্বী প্রজ্ঞাকে প্রার্থী করল বিজেপি। দলে যোগ দেওয়ার দিনেই ভোপালের টিকিট পেলেন প্রজ্ঞা। সন্ত্রাসে অভিযুক্ত এই নেত্রীকে টিকিট দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য— ‘এর চেয়ে আর বেশি কী আশা করা যায় বিজেপির কাছ থেকে’!
বিজেপি সূত্র বলছে, প্রথমে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয়ের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান বা উমা ভারতীকে দাঁড় করানোর কথা ভেবেছিল দল। কিন্তু দু’জনেই বেঁকে বসেন। কাল রাতে প্রার্থী ঠিক করতে ভোপালে বৈঠকে বসেন শিবরাজ, প্রভাত ঝা ও রামলাল। ডেকে নেওয়া হয় প্রজ্ঞাকে। বিজেপি সূত্র বলছে, মালেগাঁও কাণ্ডে এই নেত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরে ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে সব থেকে সরব ছিলেন দিগ্বিজয়। দিগ্বিজয়ের বিরুদ্ধে তাঁকে দাঁড় করালে তিনি ধর্মযুদ্ধে নামতে প্রস্তুত বলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বার্তা দিয়েছিলেন প্রজ্ঞা। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, দিগ্বিজয়কে হারানো তাঁর ব্যক্তিগত হিসেব মেটানোরও লড়াইও বটে।
১৯৮৯ সালের পর থেকে ভোপাল আসনটি একচেটিয়া ভাবে জিতে এসেছে বিজেপি। এ বার তাই ভোপাল পুনরুদ্ধারে দিগ্বিজয়কে সেখানে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। যা মেনে নেন দিগ্বিজয়। তাই গত কাল দিগ্বিজয়ের বিরুদ্ধে লড়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান প্রজ্ঞা। তার পরে আজ সকালেই বিজেপিতে যোগ দেন এই সাধ্বী। দলের পক্ষ থেকে ভোপালের টিকিট তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০০৮ সালে মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে একটি মসজিজের সামনে হওয়া বিস্ফোরণে মারা যান ছ’জন। আহত হন প্রায় শ’খানেক ব্যক্তি। ওই বিস্ফোরণ কাণ্ডে গ্রেফতার হন শুরু থেকে বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। কিন্তু মোদী ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৫ সালে ওই মামলায় প্রজ্ঞাকে ছাড় দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। ঘটনার কিছু দিন পরে ওই মামলার বিচারক রোহিনী সালিয়ান অভিযোগ করেন, ওই মামলার নিষ্পত্তি যাতে দেরিতে হয় সে জন্য এনআইএ-র চাপ ছিল। প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে এনআইএ সাক্ষ্যপ্রমাণ না পেলেও, আদালত অবশ্য তাঁকে ইউপিএ আইনে অভিযুক্ত করে জেলে রাখার নির্দেশ দেয়। পরে ২০১৭ সালে সাধ্বী প্রজ্ঞা-সহ ওই মামলায় অভিযুক্ত সাত জনই জামিনে ছাড়া পান।
মালেগাঁও বিস্ফোরণে পরই গেরুয়া সন্ত্রাসের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে, যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে একাধিক বার বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন দিগ্বিজয় সিংহেরা। দু’বছর আগে অভিযুক্তরা জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে পাল্টা আক্রমণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও বলতে শোনা গিয়েছিল, কংগ্রেসের চোখে এখন হিন্দুরাও জঙ্গি। এ বার হিন্দু ভোটের মেরুকরণের লক্ষ্যে প্রজ্ঞাকে সামনে এনে লড়াইয়ে নামতে চলেছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার।
বিজেপির এই তাসের জবাবে ‘সন্ত্রাসবাদী’-কে টিকিট দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী দেশ থেকে জঙ্গি নিকেশের কথা বলেন। অথচ টিকিট দিচ্ছেন অভিযুক্ত জঙ্গিকে। দলের নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘এক জন আট বছর ধরে জেলে আটক জঙ্গিকে টিকিট দিল বিজেপি। অবশ্য ওই দলের কাছ থেকে অন্য কিছু প্রত্যাশা করাও উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy