টাকা গাছে না ফললেও সমুদ্রে মেলে বই কি!
মোবাইল-হোয়াটস অ্যাপের জমানায় খবরটা ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। এমন আবার হয় নাকি!— প্রথমটায় গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু বুধবার বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মুম্বই মজেছে একটাই খবরে— সমুদ্রে ভেসে থাকা হাজার টাকার নোটের সারি।
গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার কাছে রেডিও ক্লাবের পাশে জলে টাকা ভাসার ছবি প্রথমে ধরা পড়ে মৎস্যজীবীদের চোখে। পথচলতি মানুষের ইতিউতি উঁকি-ঝুঁকি থেকে ভিড়ে ঠাসা দশা হতে তাই সময় লাগেনি বিশেষ। কোলাবা থেকে কাফ প্যারেড, টাকার টানে সমুদ্রের পাড়ে ভিড় জমান বহু মানুষ।
লালচে কাগজের একটা টুকরো ভেসে উঠল কি, ভিড়ে গুঞ্জন ওঠার আগে সন্ধানী চোখ এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। জেলে, সাঁতারুরা সময় নষ্ট না করে ঝাঁপ দিয়েছেন জলে। হাজার টাকার নোট মুঠোয় পুরে যখন উঠে আসছেন, মুখে যেন বিশ্ব জয়ের হাসি।
কোলাবার বাসিন্দা হরি সুরাইয়া জানালেন, ‘‘নোট চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই জলের তোড়ে আবার কোথায় হারিয়ে যাচ্ছিল। আমি যখন দেখতে পেলাম, সঙ্গে সঙ্গে জলে নামি। পনেরো মিনিটেই কাজ হাসিল।’’ সুরাইয়া একা নন। কেউ কেউ পকেটে পুরেছেন জলে ভেজা পাঁচটি হাজার টাকার নোট। কারও বা আজকের প্রাপ্তি হাজার তিনেক। সমুদ্রে নামার সহজ পথও বার করতে দেরি হয়নি। জামা কাপড় বেঁধে উৎসাহী জনতাই তৈরি করে ফেলেন লম্বা একটা দড়ি।
যাঁরা ঝাঁপ দিতে পারেননি, তাঁরাও দড়ি ধরে সহজে পৌঁছে গিয়েছেন সমুদ্রের কিনারায়।
তবে দিনের শেষে হাসি ফোটেনি অনেকের মুখেই। দুপুর রোদে জলের দিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকিয়ে থেকেও লাভ হয়নি। এক বারটি ভেসে উঠেই মহার্ঘ লালচে কাগজ মুখ লুকিয়েছে জলের তলাতেই।
টাকা নিয়ে টানাটানির পাশে কী ভাবে তা জলে পড়ল, তা নিয়ে চর্চা কম হয়নি। প্রথমে শোনা যায়, দুপুর বেলা এক ধনী ব্যবসায়ীকে ছেঁকে ধরেছিল চোরেরা। তাদের হাত থেকে বাঁচতেই লক্ষাধিক টাকার ব্যাগ জলে ফেলে দেন তিনি। অনেকে আবার জানিয়েছেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যে টাকার মালা দেওয়া হয়, তা-ই কোনও ভাবে এসে পড়েছে সমুদ্রে।
তবে ভাগ্যদেবতার হঠাৎ প্রসন্নতায় নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অনেকে। তাঁদের দাবি, স্বাধীনতা দিবসের আগে কোথাও হামলার ছক কষছে জঙ্গিরা। তাদের প্রস্তুতি থেকে পুলিশের চোখ ঘোরাতেই হয়তো জাল নোট জলে ভাসিয়েছে তারা।
গোটা মুম্বই উত্তাল হলেও এ দিন বিশেষ নড়েচড়ে বসেনি পুলিশ বাহিনী। দুপুর থেকে ঘণ্টা তিনেক টাকার টানে ধাক্কাধাক্কি হলেও দেখা যায়নি কোনও পুলিশকর্মীকেই। বিকেলের দিকে অবশ্য সমুদ্র পাড়ের দখল নেন উর্দিধারীরা। চলে ধরপাকড়ও।
কিন্তু তত ক্ষণে প্রাপ্তি যোগ হয়ে গিয়েছে অনেকেরই। হাসি মুখে বাড়ির পথ ধরেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy