নাম সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি। গোয়েন্দা সূত্রে অনুমান, মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার মূল চক্রী ছিলেন তিনিই। তাঁর নির্দেশেই পাঁচ-ছয় জন জঙ্গি মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নির্বিচারে গুলি চালায়। অন্তত এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে এ বার হামলার দায় এড়ালেন খোদ সইফুল্লা। বললেন, ‘‘সব ভারতের নাটক!’’
মঙ্গলবার দুপুরের ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও অনেকে। ইতিমধ্যেই হামলার ঘটনার দায় নিয়েছে ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতির আবহে জন্ম হয়েছিল এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর। সে সময় পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-এ-ত্যায়বার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। আর সইফুল্লা লশকরের অন্যতম প্রধান। তাই টিআরএফ হামলা চালালেও পুরো পরিকল্পনাই করেছিলেন সইফুল্লা, এমনই মনে করা হচ্ছিল গোয়েন্দা সূত্রে। কিন্তু সে সব জল্পনা উড়িয়ে দিলেন সইফুল্লা নিজেই। জানালেন, পহেলগাঁওয়ে হামলায় কোনও ভূমিকাই ছিল না তাঁর।
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তাতে সইফুল্লাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘ভারত নাটক করছে। ওরা নিজেরাই এই হামলা করিয়েছে। পহেলগাঁওয়ে হামলার সঙ্গে পাকিস্তান বা তার কোনও সন্ত্রাসী সংগঠনের যোগ নেই।’’ পাশাপাশি, ভারতের সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও আক্রমণাত্মক সুর শোনা গিয়েছে সইফুল্লার গলায়।
এর আগেও একাধিক বার ভারতবিরোধী সুর শোনা গিয়েছে সইফুল্লার কণ্ঠে। সইফুল্লা জঙ্গিগোষ্ঠী লশকরের অন্যতম মাথা তথা ভরতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা হাফিজ় সইদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। সূত্রের খবর, পাক সেনাবাহিনীতেও যথেষ্ট ‘প্রভাব’ ছিল তাঁর। পহেলগাঁও হামলার মাস দুই আগে পাকিস্তানের পঞ্জাবের কাঙ্গলপুরে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সেখানে পাক সেনার একটি বড় ব্যাটেলিয়ন ছিল। ওই ব্যাটেলিয়নে বক্তৃতা করার জন্য সইফুল্লাকে ডেকেছিলেন পাক সেনার কর্নেল জ়াহিদ জ়ারিন। সেনাকর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করতেই নাকি তাঁকে ডাকা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সইফুল্লার সেই বক্তৃতার বেশির ভাগ অংশ জুড়েই ছিল ভারতবিরোধী বার্তা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালানোর ‘পরামর্শ’ও দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়াতেও এমন আর এক সভার আয়োজন করেছিল পাক সেনা। সেই সভাতেও সইফুল্লা ভারতবিদ্বেষী বক্তৃতা করেন। পাশাপাশি, কাশ্মীর দখলের হুঙ্কারও দিতে শোনা যায় তাঁকে।