ফাইল চিত্র।
আর যেখানে যা-ই হোক, পশ্চিমবঙ্গে অন্তত বিজেপি হারুক!
জাতীয় কংগ্রেসের অনেক নেতারাই এই মনস্কামনা আজ পূর্ণ হল। কিন্তু কেরল-অসমে কংগ্রেসের হার ‘রাহুল গাঁধী অ্যান্ড কোং’-কে নতুন করে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিল।
প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের স্বাভাবিক নিয়মেই এবার কেরলে কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার কথা ছিল। তার উপরে রাহুল নিজে এখন কেরলের সাংসদ। কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা ছিল, সিএএ-এনআরসি-র ফলে অসমে তৈরি ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেও দল ক্ষমতায় ফিরবে। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে অসমে ফের বিজেপি এবং কেরলে ফের বাম জোট ক্ষমতায় ফিরল। পুদুচেরিতে গত পাঁচ বছর ধরে সরকার চালানোর পরে সেখানেও এন রঙ্গাস্বামীর কংগ্রেস, বিজেপি, এডিএমকে জোটের কাছে হেরে গেল কংগ্রেস। একমাত্র সান্ত্বনা পুরস্কার তামিলনাড়ু।
এই হারের পরে আজ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, বিজেপি বিরোধী শিবিরে কংগ্রেস কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়বে। ২০২৪-এ বিরোধী জোট তৈরি হলেও তার রাশ থাকবে আঞ্চলিক নেতানেত্রীদের হাতে। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় বিজেপিকে আটকে দিয়ে বিরোধী জোটের চালিকাশক্তি হয়ে উঠবেন বলে প্রবীণ-নবীন নেতারা একমত। পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তি টুইট করে বলেছেন, রাইসিনা হিলসে যাওয়ার রাস্তা চৌরঙ্গি লেন হয়ে যায়।
আজ রাহুল গাঁধী-সহ কংগ্রেস নেতারা মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এআইসিসি-র মঞ্চ থেকে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেছেন, জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের সুদৃঢ় পরিচালনা কংগ্রেসই করতে পারে। সরকারি ভাবে এমন দাবি করলেও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাজ্যে রাজ্যে হয় কংগ্রেস মুছে যাচ্ছে। নয়তো চালকের আসন থেকে নেমে আঞ্চলিক দলের গাড়িতে সওয়ার হতে হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের পরেই কংগ্রেসের মধ্যে অসম-পশ্চিমবঙ্গে বদরুদ্দিন আজমল, আব্বাস সিদ্দিকিদের সঙ্গে হাত মেলানোর কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুরজেওয়ালা বলেছেন, ফল বিশ্লেষণের সময় সব কারণই খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠী ফের দাঁত-নখ শানিয়ে রাহুলের বিরুদ্ধে আক্রমণে নামতে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আজ রাহুল গাঁধী বলেছেন, “আমরা বিনীত ভাবে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি।” রাহুলের বক্তব্য, কংগ্রেস নিজের আদর্শ ও মূল্যবোধের জন্য লড়াই চালাবে। রাহুলের অনুগামীরা মনে করছিলেন, অসম-কেরল-তামিলনাড়ুতে জয়ের মঞ্চকে কাজে লাগিয়েই তাঁকে ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফেরানো হবে। কিন্তু এ বার রাহুলের নেতৃত্বের পাশাপাশি তাঁর অনুগামীরাও ফের প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ অসমের দায়িত্বে ছিলেন রাহুলেরই আস্থাভাজন জিতেন্দ্র সিংহ। কেরলের দায়িত্বে ছিলেন রাহুলের আর এক আস্থাভাজন, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল।
গত লোকসভা নির্বাচনের পরে দলের হারের দায়িত্ব নিয়ে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগেও তিনি সভাপতি পদে ফিরতে অরাজি ছিলেন। সূত্রের খবর, মূলত সেই কারণেই বিধানসভা নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, জুনে নির্বাচন হবে। এবার কি ফের সভাপতি পদে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে?
রাহুল নিজে শনিবার বলেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে। কর্মীরা ঠিক করবে কে নেতৃত্ব দেবে। দল যা চাইবে, তিনি সেটাই করবেন বলেও রাহুল জানিয়েছিলেন। সুরজেওয়ালাও জানিয়েছেন, ৩০ জুনের মধ্যেই কংগ্রেসে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy