দুই যুবকের মৃত্যু ঘিরে পুলিশের বিরুদ্ধে জনরোষ আর দুই বৌদ্ধ ভিক্ষুর সমর্থকদের মধ্যে টানাপড়েনের জেরে আজও উত্তেজনা জিইয়ে থাকল চিন সীমান্তবর্তী অরুণাচলের তাওয়াংয়ে।
তাওয়াংয়ে বাঁধ-বিরোধী মঞ্চ ‘সেভ মন রিজিয়ন ফেডারেশন’-এর প্রধান লামা লবসাং গাৎসোকে জামিন না দেওয়ার জেরে গত কাল লবসাংয়ের সহস্রাধিক সমর্থক ও অনুগামী ভিক্ষুরা থানা ঘেরাও করেন। পুলিশের দাবি, জনতা থানা ও এসপির গাড়ি ভাঙচুর করে। বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে দুই যুবক মারা যান। গুলি লেগে ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক লামা-সহ কুড়ি জন জখম হন। পরিস্থিতি সামলাতে ম্যাজিস্ট্রেট লবসাংকে জামিন দেন।
চিন সীমান্তে, শান্ত পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র তথা বৌদ্ধ তীর্থ তাওয়াং এ ভাবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রও। পরিস্থিতি যাতে নহাতের বাইরে না যায় সে কারণে সেখানে সেনাও নামানো হয়েছে। দিল্লিতে বসেই মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুল ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ও জখমদের দু’লক্ষ টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। জেলাশাসক ও এসপিকে অবিলম্বে শান্তি কমিটি গড়তে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দু’টি গোষ্ঠী ও সব সংগঠনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন পুল। তিনি আশ্বাস দেন, সকলের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়েই বাঁধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে তাতেও পুলিশ-প্রশাসনের উপরে মানুষের রাগ কমছে না। গাৎসোর অনুগামী আন্দোলনকারীদের দাবি, গত কাল তাঁরা বিক্ষোভ দেখালেও এসপির গাড়ি ভাঙা বা থানায় আগুন লাগাননি। বিনা প্ররোচনায় পুলিশ গুলি চালিয়ে লোক মারার পর নিজেদের পিঠ বাঁচাতে থানার একাংশে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। ভেঙেছে এসপির গাড়ি। পুলিশ অবশ্য এ ব্যাপারে নীরব। লবসাংয়ের অনুগামীদের দাবি, প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী দোরজি খাণ্ডুর ছেলে তথা স্থানীয় বিধায়ক সেরিং তাসি নিজেই তিনটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঠিকা নিয়েছেন। লামা গাৎসোকে তিনি রাজনৈতিক ভাবেই ভয় পাচ্ছেন। পরের ভোটে গাৎসো প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন। তাই খান্ডু পরিবার আন্দোলন দমন করতে চাইছে।
তাওয়াংয়ে নদী বাঁধ-বিরোধী আন্দোলনের আঁচ পড়েছে অসমেও। লামা গাৎসোর সমর্থনে আজ উজানি অসমের বিভিন্ন স্থানে অসম জাতীয় যুব ছাত্র পরিষদ ও কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির সদস্যরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
জলবিদ্যুৎ নিয়ে রাজ্য যখন উত্তাল, তখনই মুখ্যমন্ত্রী পুল ও অরুণাচলের বিদ্যুৎমন্ত্রী টি এন থন্ডোক দিল্লিতে আজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির সমস্যা ও সমাধান নিয়ে এক আলোচনাচক্রে অংশ নেন। পুল বলেন, জলবিদ্যুৎ রাজ্যের আয়ের প্রধান উৎস হলেও বিভিন্ন কারণে অরুণাচল প্রদেশ তার পূর্ণ সদ্বব্যবহার করতে পারছে না। রাজ্যের মঞ্জুর করা প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা নিয়েও তিনি কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রাজ্যের বনসম্পদ ও পরিবেশ রক্ষা করে, ভূকম্পপ্রবণ এলাকায় পর্যাপ্ত সাবধানতা অবলম্বন করে প্রকল্পগুলি শুরু করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন পুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy