Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Lalu Prasad Yadav

‘খেতে দেয়নি, ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দিয়েছে’, শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ লালুর পুত্রবধূর

২০১৮-র মে মাসে আরজেডি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রিকা রায়ের মেয়ে ঐশ্বর্যর সঙ্গে বিয়ে হয় লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপের।

রবিবার পটনায় ঐশ্বর্য। —ফাইল চিত্র।

রবিবার পটনায় ঐশ্বর্য। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:১০
Share: Save:

দুর্নীতি মামলায় জেল খাটছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব। আর তাঁর অনুপস্থিতিতেই চরম আকার ধারণ করল যাদবদের পারিবারিক কলহ। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন লালুপ্রসাদের জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ ঐশ্বর্য রায়। তাঁর দাবি, স্বামী ও শ্বশুরের অনুপস্থিতিতে ননদ ও শাশুড়ি মিলে তাঁর উপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। খেতেও দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। এমনকি ননদের প্ররোচনায় তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ঐশ্বর্য। যদিও সব অভিযোগই খারিজ করেছেন লালুপ্রসাদের কন্যা তথা আরজেডি-র রাজ্যসভা সাংসদ মিসা ভারতী।

২০১৮-র মে মাসে আরজেডি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রিকা রায়ের মেয়ে ঐশ্বর্যর সঙ্গে বিয়ে হয় লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপের। কিন্তু বিয়ের সাত মাসের মধ্যেই গৃহত্যাগী হন তেজপ্রতাপ। শিক্ষিত, স্বাধীনচেতা ঐশ্বর্যর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না বলে জানান তিনি। এমনকি, ওই বাড়িতে ঐশ্বর্য থাকলে তিনি ফিরবেন না বলেও জানিয়ে দেন। তার পরেও শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন ঐশ্বর্য। স্বামী বা শ্বশুরবাড়ি সম্পর্কে এত দিন কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি তাঁকে।

কিন্তু রবিবার পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। পটনায় ১০ সার্কুলার রোডে, শাশুড়ি রাবড়ি দেবীর বাংলোর বাইরে, একটি ছাউনির নীচে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায় ঐশ্বর্যকে। খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যম হাজির হলে ঐশ্বর্য জানান, স্বামী তেজপ্রতাপ বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার পরও মুখ বুজে শ্বশুরবাড়িতে পড়েছিলেন তিনি। ভাঙা সম্পর্ক ফের জোড়া লেগে যাবে বলে আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু গত তিন মাসে নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে তাঁর। ননদের নির্দেশে খেতে দেওয়া হয় না তাঁকে। বরং বাপের বাড়ির পাঠানো খাবার খেয়েই থাকতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আগামী কাল অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন সব্যসাচী দত্ত​

এ ভাবেই চলছিল এত দিন। কিন্তু রবিবার রান্না ঘরে ঢুকতে গেলে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে বলে দাবি করেন ঐশ্বর্য। তাঁর দাবি, রান্নাঘরে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। সেই নিয়ে বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁর। তার পর রাবড়ি দেবী তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বার করে দেন। উপায় না দেখে বাপের বাড়ি এবং মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য চালু হেল্পলাইনে ফোন করেন তিনি। তবে তার পরেও বাড়ির দরজা খোলা হয়নি তাঁর জন্য। এ সব কিছুর জন্যই ননদ মিসা ভারতীকে দায়ী করেন ঐশ্বর্য। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিনিয়ত আমার সঙ্গে দু্র্ব্যবহার করে এসেছে মিসা। নিদারুণ অত্যাচার চালিয়ে এসেছে। শনিবার রাতেও নির্যাতন করে এবং শাশুড়ির সামনেই বাড়ি থেকে বার করে দেয়।’’

মেয়ের ফোন পেয়ে বৃষ্টির মধ্যেই ১০ নং সার্কুলার রোডের ওই বাংলোর সামনে ছুটে আসেন চন্দ্রিকা রায়। এসে পৌঁছয় পুলিশও। তাঁরাই কথা বলে ঐশ্বর্যকে বাড়ির ভিতরে পাঠান। শ্বশুরমশাই জেলের বাইরে থাকলে তাঁকে এত ভুগতে হত না বলে জানান ঐশ্বর্য। স্বামী তেজপ্রতাপ এবং দেওর তেজস্বীর মধ্যে বিভেদের জন্যও মিসা ভারতীকে দায়ী করেন তিনি। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেন মিসা ভারতী। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আমি ওখানে থাকিই না। তা সত্ত্বেও অযথা আমাকে এর মধ্যে জড়ানো হচ্ছে। এমনটাই হয়। স্বামী-স্ত্রী-র মধ্যে ঝামেলা হলে সবসময় ননদকেই টানা হয়। কিন্তু আপনারা জানেন, গত কয়েক মাসে মাত্র তিন-চার বারই পটনা গিয়েছি আমি। গেলেও শুধুমাত্র মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছি। তাই সব অভিযোগ মিথ্যা।’’

আরও পড়ুন: রাজীব মামলায় রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট, ঝুলেই রইল আগাম জামিনের আবেদন​

এ নিয়ে তেজপ্রতাপ বা রাবড়িদেবীর তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে দলনেতার অনুপস্থিতিতে এই ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে আরজেডি নেতাদের। যাদবদের পারিবারিক দ্বন্দ্বে দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কিত তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy