বেশ কিছু দিন ধরেই লালুপ্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো উঠছিল। তিনি অসুস্থতার দোহাই দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সেই হাসপাতালকে এখন দলীয় কার্যালয় করে তুলেছেন। সেখান থেকেই দলের কাজকর্ম পরিচালনা করছেন। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) সুপ্রিমো লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে ওঠা বিরোধীদের এ সব অভিযোগ নিয়ে এ বার আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লালুপ্রসাদকে জেলের কুঠুরিতে ফেরত পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছে ওই মামলায়।
মণীশকুমার নামের এক ব্যক্তি ঝাড়খণ্ডের এক আদালতে ওই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, জেলে নিয়মকানুনের ধার ধারছেন না লালুপ্রসাদ। যখন-তখন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন তিনি। চিকিৎসার নাম করে রাজ্য সরকারের নাকের ডগায় রাজনৈতিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-ও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন মণীশ। বন্দি সাধারণ কোনও নাগরিক হন বা লালুপ্রসাদের মতো রাজনৈতিক নেতা, সকলের ক্ষেত্রে জেলের নিয়মকানুন সমান ভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন মণীশকুমারের আইনজীবী মনোজ ট্যান্ডন। লালুকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এবং তাতে সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পশুখাদ্য সংক্রান্ত পর পর তিনটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৭-র ২৩ ডিসেম্বর থেকে জেলে রয়েছেন লালুপ্রসাদ। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত দু’বছর ধরে চিকিৎসাধীন তিনি। জেল হেফাজতেই রাঁচীর রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস)-এ চিকিৎসা চলছে তাঁর। শুরুতে হাসপাতালের ওয়ার্ডে তিনি ভর্তি থাকলেও, করোনা পরিস্থিতিতে তাঁকে হাসপাতালে চত্বরে ডিরেক্টরের বাংলোতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের বাইরে ভিড় লালুর সমর্থকদের। ছবি: পিটিআই।
আরও পড়ুন: বকেয়া মেটাতে টেলিকম সংস্থাগুলিকে ১০ বছর সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
কিন্তু আসন্ন বিহার নির্বাচনের আগে ওই বাংলোতে লালুপ্রসাদ কার্যত পার্টি অফিস খুলে বসেছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাঁদের দাবি, প্রতি দিনই ওই বাংলোয় আরজেডি নেতা ও সমর্থকরা ভিড় জমান। দলের হয়ে টিকিট পেতে সারা ক্ষণ সেখানে হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন লালুর অনুগামীরা। যারা বাংলোর ভিতরে যেতে পারছেন না, তাঁরা দারোয়ানের হাত দিয়ে বায়োডেটা পাঠিয়ে দিচ্ছেন আরজেডি সুপ্রিমোর কাছে। অভিযোগ এমনই।
গোটা ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে আরজেডির প্রাক্তন শরিক সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)। দলের মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতিতে এ বার প্রশ্ন থাকবে যে, কোন নেতা জেলে পার্টি অফিস খুলে বসেছিলেন? জেলের নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করছেন না লালু। ওই বাংলোয় বসে সহযোগীদের সঙ্গে নির্বাচনের কৌশল গড়ছেন। কাকে কোথায় প্রার্থী করা হবে ঠিক করছেন। আরজেডির সমর্থন রয়েছে বলে লালুর কাজকর্মে আপত্তি করছে না ঝাড়খণ্ড সরকারও।’’
আরজেডির হাত ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে সরকার গড়েছিলেন নীতীশ কুমার। বিজেপির মুখপাত্র নিখিল আনন্দ বলেন, ‘‘রিমসের ডিরেক্টরের বাংলোকে রাজনৈতিক আখড়া বানিয়ে ছেড়েছেন লালুপ্রসাদ। পটনায় তো বটেই রাঁচীতেও এখন আরজেডির টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ভোটের টিকিট পেতে প্রতি দিন কয়েকশো আরজেডি নেতা এবং সমর্থকরা পটনা থেকে রাঁচী ছুটে যাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু আরও এক চিকিৎসকের
কিন্তু বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আরজেডির মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি। তাঁর কথায়, ‘‘লালুপ্রসাদ যাতে করোনায় আক্রান্ত না হন, তার জন্যই হাসপাতালের ডিরেক্টরের বাংলোয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। সেখানে ওঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই কারও। এটা নিয়ে খামোকা বিতর্ক বাঁধানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy