লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন পাচ্ছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। শনিবার সকালে এক্স হ্যান্ডেলে সে কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, এই সম্মান প্রদানের কথা জানাতে তিনি আডবাণীর সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। তাঁকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, তিন দশক আগে দেশে রামমন্দির আন্দোলনের সময়ে সঙ্ঘ পরিবারের ‘মুখ’ ছিলেন আডবাণী। তাঁর রামরথ যাত্রায় ভর করে হিন্দি বলয়ে উত্থান হয়েছিল বিজেপির। দেশে প্রথম রামরথ ছুটিয়েছিলেন আডবাণীই।
কিছু দিন আগে সেই রামমন্দিরের উদ্বোধন করা হয়েছে অযোধ্যায়। আডবাণী যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, মোদীর হাতে সেই বৃত্তই যেন সম্পূর্ণ হয়েছে গত ২২ জানুয়ারি। অযোধ্যায় ‘রামের জন্মভূমি’তে স্থাপিত রামমন্দিরে রামলালার বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন মোদী। সেই রামমন্দির উদ্বোধনের বছরেই ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হল আডবাণীকে।
রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অবশ্য উপস্থিত থাকতে পারেননি আডবাণী। শেষ মুহূর্তে জানা যায় তিনি অযোধ্যায় যেতে পারছেন না। আডবাণীর বয়স এখন ৯৭। শারীরিক অসুস্থতার কারণে রামমন্দির উদ্বোধনে যাননি তিনি। জানা গিয়েছিল, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডা’ লেগেছে তাঁর। তাই অযোধ্যায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফেই তাঁকে অযোধ্যায় না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই বলেছিলেন, “আডবাণীর বয়সের বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। আমরা তাঁকে অযোধ্য়ায় না আসার অনুরোধ করেছি। বিষয়টি তিনি মেনে নিয়েছেন।”
৩২ বছর আগে বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন আডবাণী। ২০২০ সালে তাঁকে এবং অন্যান্য অভিযুক্তকে এই ঘটনায় বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হয়। আদালত জানিয়েছিল, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ওই ঘটনার নেপথ্যে কোনও ষড়যন্ত্র বা পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। গোটাটাই ‘হঠাৎ ঘটে যাওয়া’ স্বতঃস্ফূর্ত জনরোষের ফল। ঘটনায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ছিল ৪৯। এর মধ্যে অনেকেই বর্তমানে বেঁচে নেই।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯০, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ এবং ২০০৪ থেকে ২০০৫— তিন দফায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন আডবাণী। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ওই সরকারেই তিনি ছিলেন কয়লামন্ত্রীও। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন বিজেপির এই প্রবীণ নেতা।
Advani Ji’s decades-long service in public life has been marked by an unwavering commitment to transparency and integrity, setting an exemplary standard in political ethics. He has made unparalleled efforts towards furthering national unity and cultural resurgence. The conferring…
— Narendra Modi (@narendramodi) February 3, 2024
তাঁকে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার কথা জানিয়েছে এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী মোদী লিখেছেন, ‘‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, লালকৃষ্ণ আডবাণী ভারতরত্ন সম্মান পাচ্ছেন। আমি নিজে ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছি। দেশের উন্নয়নে ওঁর অবদান অনস্বীকার্য। দেশের সেবায় তৃণমূল স্তর থেকে কাজ করতে শুরু করেছিলেন তিনি। উপপ্রধানমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলেন। ওঁর কাজ আমাদের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ।’’
ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আডবাণী। তিনি বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আমি ভারতরত্ন গ্রহণ করছি। ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ হিসাবে এটা আমার সম্মান নয়, বরং এটা আমার নীতি, আদর্শের সম্মান। সারা জীবন ধরে যে আদর্শ আমি মেনে চলার চেষ্টা করেছি।’’
রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে আডবাণীকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে শনিবার জানান, তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন। দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সন্দীপ দীক্ষিতের আবার বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি একটু দেরিতেই আডবাণীকে স্মরণ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy