মথুরায় কৃষ্ণের জন্মভূমি সংলগ্ন এলাকায় বেআইনি বাড়িঘর ভাঙার কাজ আগামী ১০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষকে শীর্ষ আদালতের তরফে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষ মথুরা স্টেশনের অদূরে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমির পিছনে রেলের জমি থেকে শতাধিক বেআইনি বাড়ি এবং দোকান ভাঙার কাজ শুরু করেছিল। যোগী আদিত্যনাথের সরকার এবং রেলের সেই উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব শাহ। শীর্ষ আদালতে তিনি বুধবার জানান, এখনও পর্যন্ত ১০০-র কাছাকাছি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। প্রায় ৭০টি বাড়ি অক্ষত রয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইয়াকুবের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ ১০ দিনের জন্য জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। পরের সপ্তাহে ফের এই মামলার শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, মথুরার ওই কৃষ্ণমন্দির লাগোয়া শাহি ইদগাহে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ রয়েছে দাবি করে চলতি মাসেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি নির্মাণ ট্রাস্ট’ নামে একটি সংগঠন। বিচারপতি এসকে কল এবং বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চের কাছে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের মতোই মথুরার শাহি ইদগাহে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র আবেদন জানানো হয়েছে।
মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, অওরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬৯ থেকে ১৬৭০ সালে কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জায়গায় শাহি ইদগাহ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
মথুরা শাহি ইদগাহে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ আবেদনের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণার আগেই সেখানে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ নষ্ট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে পুরো চত্বরটি সিল করার দাবিতে নতুন করে হিন্দুত্ববাদীদের তরফে পৃথক একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে মথুরা আদালতে। প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর এএসআইএ-র অধীনে সেখানে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল মথুরা আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশকে ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। ১৯৯১ সালের ওই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের পর দেশে যে ধর্মীয় স্থান যে অবস্থায় ছিল, সে ভাবেই তা থাকবে। এর পর মামলাটি গিয়েছে শীর্ষ আদালতে।