ভাইরাল ভিডিয়োয় ইপিআর
চাষি যেন চক্রব্যূহের অভিমন্যু। ২০১৬ থেকে চাষিদের আত্মহত্যার রিপোর্ট উধাও। দাম না পেয়ে পেঁয়াজ, টোম্যাটো ছুড়ে ফেলতে হলেও কোনও খবর নেই তা নিয়ে। চাষিদের এই দুর্দশার জন্য দায়ী কে?
রাজনৈতিক দলের ইস্তাহার নয়। এই সব কথা উঠে আসছে র্যাপের ছন্দে। রাজপথে বা মাঠে রাজনীতির সভাতেও নয়, উঠে আসছে জেন-ওয়াইয়ের পছন্দের চ্যানেলের ঝকঝকে অনুষ্ঠানে। কলকাতায় জন্মানো, বেড়ে ওঠা শান্তনম শ্রীনিবাসন আইয়ারের সেই র্যাপের ভিডিয়োই ভাইরাল এখন ফেসবুকে।
শান্তনম নয়, গানের দুনিয়া তাঁকে চেনে ‘ইপিআর’ নামে। সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় বিনোদন চ্যানেল আয়োজিত র্যাপ রিয়্যালিটি শো-তে যোগ দিয়ে রানার্স আপ হন ইপিআর। সেই অনুষ্ঠানের একটি গানের টুকরো বৃহস্পতিবার থেকে ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। অজস্র শেয়ারের, অগুনতি মন্তব্যের মাঝে ফেসবুক-জনতা বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছে, এই সব কথা এ ভাবেও বলা যায়?
ইপিআরের গানের সঙ্গে যাঁরা পরিচিত, তাঁরা অবশ্য বিস্মিত নন। কারণ, গানের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদের ভাষা তিনি খুঁজে নিয়েছেন বরাবরই। কলকাতার ব্যান্ড আন্ডারগ্রাউন্ড অথরিটি (ইউএ)-র সদস্য ইপিআর নিজে বলছেন, ‘‘আমি বরাবর চেয়েছি আমার লেখার মধ্যে দিয়ে খারাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। আমার মনে হয় যে কোনও শিল্পের ক্ষেত্রেই এটা অত্যন্ত জরুরি। গান শুনে যদি কেউ ওই বিষয়গুলো নিয়ে এক বার ভাবেন তা হলেই গান সফল হবে।’’
ইপিআরের সেই অবস্থানের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে ওই রিয়্যালিটি শো-তে তাঁর গানের নানা বিষয়ের মধ্যে দিয়ে। সেখানে যেমন এসেছে চাষিদের দুর্দশার কথা, তেমনই এসেছে অ্যাসিড হানা, সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের খুন, পঞ্জাবে ড্রাগ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমে খুন হয়ে যাওয়া তরুণী ড্রাগ ইন্সপেক্টর নেহা শোরির কথা। গৌরি-নেহার জন্য ইপিআর লিখেছেন, ‘‘নাজ় হ্যায়, হম সবকো তুঝপে নাজ় হ্যায়/ তেরে বলিদান পর ইস দেশ কা সালাম হ্যায়।’’
কিন্তু যে বয়সের দর্শক এই ধরনের গানের শ্রোতা, বিশেষত একেবারে তরুণ প্রজন্ম, তাঁরা কি গানে এই ধরনের বিষয় পছন্দ করবেন? ইপিআরের বিশ্বাস নিশ্চয়ই করবেন। তিনি বলছেন, ‘‘গান করতে গিয়ে তরুণ প্রজন্মের থেকে যে ভালবাসা, সমর্থন আমি পেয়েছি তাতে বুঝেছি তরুণ প্রজন্ম দেশের বাস্তব সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট অবহিত, তা সে এনআরসি হোক বা দেশের আর্থিক পরিস্থিতি।’’
ভিডিয়ো দেখে মুগ্ধ হয়ে অনেক দর্শক-শ্রোতাই জানতে চেয়েছেন ইপিআরের পরিচয়। অনেকে জানিয়েও দিয়েছেন তাঁর পুরো নাম। তা দেখে দক্ষিণী মনে হলেও ইপিআর নিজে বলছেন, অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে তিনি বাঙালি। তিনি জানাচ্ছেন, বিয়ের পর তাঁর মা-বাবা তামিলনাড়ু থেকে কলকাতায় চলে আসেন। তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা এই শহরেই।
তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার যে একটা বহুমাত্রিক সংস্কৃতি, সে জন্য নিজেকে কলকাতার ছেলে বলতে আমার গর্ব হয়। আমি আজ যেমন, এই সংস্কৃতির জন্যই তেমন হয়েছি।’’ সে জন্যই হয়তো র্যাপের মধ্যে ইপিআর রাখেন রবীন্দ্রনাথকেও। লেখেন, ‘‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, আওয়াজ তুমহারি খো যায়ে, আওয়াম ইয়ে বেহরি হো যায়ে, তবে একলা চলো রে...’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy