জীবন সিংহ।
প্রাক্তন কেএলওদের নিয়ে আলোচনার মধ্যে নতুন করে চাপ বাড়াতে ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করলেন জীবন সিংহ। এই ভিডিয়ো আনন্দবাজার যাচাই করেনি। এখানে জীবন দাবি করেছেন, কোচ-কামতাপুরের মানুষ এখনও পরাধীন। কী ভাবে? তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “আজাদি কা অমৃৎ মহোৎসব সানন্দে পালন করবেন বিহারি, মরাঠি, বাঙালি, তামিলরা। কারণ তাঁরা নিজেদের গোষ্ঠীগত পরিচয় বজায় রাখতে নিজেদের রাজ্য পেয়েছেন। ‘আজাদি’র অমৃত উপভোগ করছেন। কিন্তু কোচরা ক্রমেই ধবংসের মুখে। তাই ভারত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তিন দিন ব্যাপী ‘আজাদি কা অমৃৎ মহোৎসবে’ কোচেরা ভূমিকা নেবে না।” তাঁর অভিযোগ, মার্জার চুক্তি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ভারত সরকার একই কোচ রাজ্যকে অসম, বাংলা ও বিহারে ভেঙে দিয়েছে। ফলে কোচ-কমতাপুরিরা স্বাধীন ভারতে পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছে।
কোচ-কামতাপুরি সংগঠনগুলিকে এক মঞ্চে এনে নতুন করে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রয়েছেন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিরা। রয়েছেন জীবনের ধর্মপুত্র দেবরাজ দিবাকর সিংহ। শান্তি প্রক্রিয়ার পথ খোলার চেষ্টা যখন শুরু হয়েছে এবং সেটা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের আগ্রহেই, তখন হঠাৎ জীবন এমন বার্তা দিলেন কেন? ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, এই ভাবে নিজের দিক থেকে সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে রাখলেন জীবন। এর মধ্যেই কোচ-কামতাপুরের সংগঠনগুলি জানিয়েছে, রাজ্য না হলেও অন্তত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চায় তারা। এই ক্ষেত্রে দুই রাজ্য সরকারের পক্ষে যদি অনড় মনোভাব দেখানো হয়, তা হলে জীবন আলোচনার টেবিলে আসার আগেই কোচ-কামতাপুরিরা আরও পিছু হটতে পারেন। সেটা যাতে না হয়, তাই আগেই জাতিগত আবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন জীবন।
আর একটি সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, আলোচনার টেবিলে বসলেও কোচ ও রাজবংশীরা অনেক মতে বিভক্ত। তাতেও তাদের উপরে চাপ রাখা সহজ হচ্ছে বলে মনে করছেন কোচদের একটি অংশ। এ দিন বার্তা দিয়ে ওই সব কটি সংগঠন ও নেতাদের এক করারও বার্তা দিলেন জীবন। সব থেকে বড় কথা, ভিডিয়োয় জীবনের সঙ্গে চার বন্দুকধারী থাকলেও তাঁর সংগঠনে লোকসংখ্যা নিয়ে এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। এর আগের ভিডিয়োয় ৫ জনকে দেখা গিয়েছিল। এ দিন সংখ্যা কম। গোয়েন্দাদের একাংশের সন্দেহ, জীবন জায়গা পরিবর্তন করে ওই ভিডিয়ো তোলেন। কারণ, আগের মতো এখানে ঘন জঙ্গল দেখা যাচ্ছে না ভিডিয়োয়। সে ক্ষেত্রে জীবন মায়ানমারেই রয়েছেন, না অন্যত্র ডেরা বেঁধেছেন, খোঁজ করেছে গোয়েন্দারা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ওর গতিবিধি নিয়ে নজরদারি চলছে।”
তৃণমূলের রাজবংশী নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই সব কিছু করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়। এটুকু বলতে পারি মানুষ এখন উন্নয়নের সঙ্গে আছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy