Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

‘ওকে যেখানে মেরেছে, সেখানে আমাকেও মারুক’

সে খবর প্রকাশ্যে আসার পরে প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফের মা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, তাঁর একমাত্র ছেলে আর বেঁচে নেই।

চেন্নাকেসাভুলু। ফাইল চিত্র।

চেন্নাকেসাভুলু। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:০২
Share: Save:

খবরটা শুনে থম মেরে গিয়েছেন ওঁদের অনেকে। হায়দরাবাদের তরুণী পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত চার জনের পরিবারের সদস্য ওঁরা। আজ সকালে হায়দরাবাদ পুলিশ জানিয়ে দেয়, সংঘর্ষে মেরে ফেলা হয়েছে চার অভিযুক্ত, মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চেন্নাকেশভুলুকে (২০)।

সে খবর প্রকাশ্যে আসার পরে প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফের মা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, তাঁর একমাত্র ছেলে আর বেঁচে নেই। এর আগে আরিফের বাবা বলেছিলেন, তাঁর সন্তান যদি সত্যিই দোষী হয়, তা হলে তাকে যেন কড়া শাস্তি দেওয়া হয়। তেলঙ্গানার নারায়ণপেট জেলার জাকলার গ্রামের আরিফ স্থানীয় পেট্রোল পাম্পে কাজ করত। পরে ট্রাকচালকের কাজে যোগ দিয়েছিল।

স্বামীর মৃত্যুর খবর আসার পরে সামলানো যাচ্ছে না চেন্নাকেশভুলুর স্ত্রী রেনুকাকে। মাস ছয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। চেন্নাকেশভুলু যে কাউকে ধর্ষণ করতে পারে, মানতে পারছেন না তিনি। কাঁদতে কাঁদতে রেনুকা বলেছেন, ‘‘পুলিশ বলেছিল, স্বামীর কিছু হবে না। ওকে শীঘ্রই বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখন জানি না, কী করব। আমার স্বামীকে যেখানে মেরে ফেলা হয়েছে, সেখানেই নিয়ে চলো, আমাকেও মেরে দাও।’’

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের অস্ত্র কি সাজিয়ে রাখতে?’

কখনও আবার তিনি বলে উঠছেন, ‘‘স্বামীকে যারা মারল, তাদের মেরে ফেলুন।’’ নারায়ণপেটের গুড়িগন্দলা গ্রামের যুবক চেন্নাকেশভুলু। এই পরিবারটিকে যাঁরা চিনতেন, তাঁদের দাবি ওই যুবক কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন।

জল্লু শিবার বাবা জল্লু রামাপ্পা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে অপরাধ করে থাকতে পারে। কিন্তু সে জন্য এমন পরিণতি মেনে নেওয়া যায় না। রামাপ্পার কথায়, ‘‘অনেকেই ধর্ষণ, খুন করে থাকে। তাদের এ ভাবে মেরে ফেলা হয় না। ওদেরই কেন এ ভাবে মেরে ফেলা হবে?’’ নারায়ণপেটের গুড়িগন্দলা গ্রামেরই বাসিন্দা জল্লু শিবা আর জল্লু নবীন।

স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত চার জনের পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ছিল না। তেমন ভাবে লেখাপড়াও করেনি কেউ। কিন্তু ইদানীং রোজগার ভাল হওয়ায় হাতে টাকা আসছিল। মদ এবং অন্যান্য অনেক কিছুতে অভিযুক্তরা টাকা ওড়াত বলে দাবি। পরিবারের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না তাদের উপরে।

কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি, অভিযুক্তদের পরিবারের কেউ কেউ তাদের দেহ নিতে অস্বীকার করেছে।

তরুণী পশু চিকিৎসকের বাবা আজ বলেছেন, এই ঘটনায় তাঁর মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মেয়ে খুন হওয়ার দশ দিন পরে এই ঘটনা ঘটল। পুলিশ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি। মেয়েকে ফিরে পাব না। কিন্তু এই ঘটনায় একটা কড়া বার্তা গেল। এতে অপরাধীরা ভয় পাবে।’’

নির্যাতিতার প্রতিবেশীরাও পুলিশের কাজে খুশি। তাঁদের অনেকেই আজ বলেছেন, যথাযথ বিচার হয়েছে। এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা যদিও গণধর্ষণ ও খুনের পরে কোনও রাজনৈতিক নেতা এবং সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেননি। তাঁরা জানিয়েছিলেন, কারও সহমর্মিতা চাই না। আজ অবশ্য তাঁরা বলছেন, ‘‘যা হয়েছে, ঠিক হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hyderabad Encounter Telengana Rape Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy