—প্রতীকী চিত্র।
ধারের টাকা শোধ করতে একের পর এক মানুষ কলকাতার হাসপাতালে গিয়ে বেচে আসছেন কিডনি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো টাকা পাননি কেউ। শনিবার অসমের মরিগাঁও জেলার দক্ষিণ ধরমতুলে কিডনি বিক্রেতা খুঁজতে আসা গুয়াহাটির এজেন্ট লিলিমাই বড়োর সঙ্গে টাকা না-পেয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীদের একাংশ। আসে পুলিশ। দামি গাড়ি, চেকবই-সহ ধরা পড়া ওই মহিলাকে জেরা করেই জানা যায়, গ্রামে অন্তত ৩০ জন কলকাতার একটি হাসপাতালে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। পরে জানা যায়, মরিগাঁওয়ের আরও বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ ধার শোধ করতে কিডনি বিক্রি করেছেন ওই হাসপাতালে। চক্রের মূল মাথা বরঘাটের রমেন মেধি। পুলিশ জানতে পেরেছে কিডনি দিতে এখনও জেলার সাতটি পরিবার কলকাতায় রয়েছে।
মাইক্রোফিনান্স সংস্থা থেকে মহিলাদের নেওয়া ঋণ মকুব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসার পরে আপাতত বিভিন্ন শর্ত চাপিয়ে কথা ঘোরাতে ব্যস্ত হিমন্তবিশ্ব শর্মার সরকার। কিন্তু তার মধ্যেই ধরমতুলে কিডনি বিক্রি চক্রের অন্যতম পাণ্ডা ধরা পড়ায় উঠে এল ঋণ ও দারিদ্রের ফাঁদে জর্জরিত অসমের গ্রামীণ অর্থনীতির করুণ ছবি।
পূব ধরমতুলের বাসিন্দা মনু গোয়ালা বলেন, “টাকার সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম। বাজারে অনেক টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। টুটু দাস নামে দালাল মারফত যোগাযোগ হয় কলকাতায়। তিন মাস আগে কিডনি দিয়ে আসি। পেয়েছি তিন লক্ষ টাকা।” কিন্তু দক্ষিণ ধরমতুলের এক ব্যক্তি আরও পাঁচ জনকে নিয়ে কলকাতার হাসপাতালে কিডনি দান করে এসেছেন। পেয়েছেন মাত্র দেড় লক্ষ করে টাকা। এসপি অপর্ণা নটরাজন জানান, এখনও পর্যন্ত চক্রের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা চক্রের খোঁজ চলছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা হচ্ছে ঠিক কত জন কলকাতায় কিডনি বিক্রি করেছেন।
জানা গিয়েছে, দালাল চক্র কিডনিদাতাদের আগে থেকে শিখিয়ে-পড়িয়ে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাজ্য অঙ্গদান স্বীকৃতি কমিটির সামনে নিয়ে যেত। সেখানে তারা জানাত, স্বেচ্ছায় কিডনি দান করতে যাচ্ছে। পুলিশ গোটা বিষয়টি কমিটিকেও জানিয়েছে। সেখান থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
স্থানীয় মানুষ জানান, ৫ লক্ষ টাকার লোভ দেখিয়ে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হত গ্রামবাসীদের। কিন্তু পুরো টাকা কখনওই দেওয়া হত না। দক্ষিণ ধরমতুলের কৃষ্ণা দাস জানান, স্বামী প্রতিবন্ধী। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ দিতে পারছিলেন না। চাপ আসছিল। তাই সাড়ে চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিডনি বেচতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু হাতে পেয়েছেন সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। শ্রীকান্ত দাস জানান, ছেলের চিকিৎসা করাতে টাকা দরকার ছিল। দালালরা বলে পাঁচ লক্ষ টাকা দেবে, সেই সঙ্গে ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দেবে কলকাতার হাসপাতালে। কিন্তু কিডনি কেটে নেওয়ার পরে দেওয়া হয় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। ছেলের চিকিৎসাও করায়নি হাসপাতাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy