জম্মু ও কাশ্মীরে পাক জঙ্গিদের হামলায় ভারতীয় সেনার পাঁচ জওয়ানের মৃত্যুতে উল্লাস প্রকাশ করলেন নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন শিখ ফর জাস্টিস (এসএফজে)-এর সেই নেতা গুরুপতবন্ত সিংহ পন্নুন। সেই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, ‘‘আগামী দিনে ভারতের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়তে কাশ্মীরিদের সঙ্গে নতুন ফ্রন্ট গড়ে লড়াই হবে।’’
জম্মুর পুঞ্চ এবং রাজৌরি জেলার সীমানায় সেনার দু’টি গাড়িতে বৃহস্পতিবারের জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাঁচ জওয়ান নিহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ঘটনার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে পাক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন ‘দ্য পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট’ (পিএএফএফ)। খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা পন্নুন শুক্রবার সমাজমাধ্যমে একটি বার্তায় বলেন, ‘‘এই প্রত্যাঘাত কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার ধারাবাহিক হিংসার পরিণতি।’’
আরও পড়ুন:
গত কয়েক দশক ধরে ভারতীয় সেনা কাশ্মীরে গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পন্নুন বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অবিলম্বে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।’’ এসএফজে নেতা পন্নুন নিজেকে ‘কাশ্মীর-খালিস্তান গণভোট ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র বলেও দাবি করেন। পন্নুনের এই বিবৃতিতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে খলিস্তানি গোষ্ঠীর যোগাযোগ স্পষ্ট বলে মনে করছেন গোয়েন্দাদের একাংশ। তাঁদের মতে, ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতায় গতি আনতেই কাশ্মীরি এবং খলিস্তানি জঙ্গিদের মেলবন্ধনে সক্রিয় হয়েছে আইএসআই।
আরও পড়ুন:
আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এসএফজে চায় পঞ্জাবের মধ্যে ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম’ রাষ্ট্র গড়তে। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। জানিয়েছিল, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পন্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পরেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের মদতে সে দেশে বসে পন্নুন ধারাবাহিক ভাবে ভারত বিদ্বেষী প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি, আমেরিকার তরফে অভিযোগ উঠেছে এসএফজে প্রধান পন্নুনকে খুনের চেষ্টায় জড়িত রয়েছেন ভারতীয় গুপ্তচরেরা। আমেরিকান কংগ্রেসের ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাঁচ সদস্যের তরফেই এসেছে ওই অভিযোগ। যা নিয়ে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিতর্ক তৈর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভারত সব সময়ই আইনের শাসনের প্রতি দায়বদ্ধ। দেশের কোনও নাগরিক যদি কিছু করে থাকেন, তা হলে সরকার তা খতিয়ে দেখবে।’’