Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kerala

মন্ত্রীদের ক্ষমতা কি কমছে, বিতর্ক কেরলে

রকার পরিচালনার কার্যবিধিতে (রুল্‌স অফ বিজ়নেস) কিছু পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা হয়েছে কেরলে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

নীতিগত ভাবে তারা সকলের সমানাধিকারের পক্ষে। কিন্তু সরকার পরিচালনার বিধিতে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আগের চেয়ে বেশি ক্ষমতা দিতে চায় কেরলের বাম সরকার। প্রস্তাবিত এই বিধি সংশোধন ঘিরেই এ বার বিতর্ক দেখা দিল সে রাজ্যের বাম শিবিরে।

সরকার পরিচালনার কার্যবিধিতে (রুল্‌স অফ বিজ়নেস) কিছু পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা হয়েছে কেরলে। এই মর্মে একটি খসড়া রিপোর্ট মন্ত্রিসভার একটি সাব-কমিটির কাছে জমা পড়েছে। রিপোর্টের নানা প্রস্তাবে এক দিকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বেশি ক্ষমতা এবং অন্য দিকে দফতরের মন্ত্রীদের বদলে সচিবদের কর্তৃত্ব বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সংবিধান নির্ধারিত কিছু বাড়তি ক্ষমতা এমনিতেই থাকে। তার পরিধি আরও প্রসারিত করতে চাওয়া ঘিরেই দক্ষিণী এই রাজ্যে বিতর্ক। কার্যবিধিতে এমন সংশোধন মানতে নারাজ সিপিআই-সহ কিছু বাম শরিক দলের মন্ত্রীরা। বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে বিতর্ক হচ্ছে দেখে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন তাঁর সতীর্থদের আশ্বাস দিয়েছেন, মন্ত্রিসভায় পূর্ণাঙ্গ আলোচনা না করে কিছুই কার্যকর হবে না।

প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এখন যা আছে, তার চেয়ে আরও বেশি বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিজের ক্ষমতায় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। বিভিন্ন দফতর সংক্রান্ত বিষয়েও সচিবদের কাছ থেকে ফাইল চেয়ে সই করে চূড়ান্ত সম্মতি দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীই। বিভাগীয় মন্ত্রীদের মত থাকা সেখানে জরুরি নয়। খসড়া রিপোর্ট সাব-কমিটির হাতে আসার পরেই দানা বাঁধতে শুরু করেছে বিতর্ক। ওই কমিটির সদস্য একাধিক মন্ত্রী তাঁদের ভিন্নমত জানিয়ে সরাসরি চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে।

রাজ্যের রাজস্ব মন্ত্রী এবং সিপিআই নেতা ই চন্দ্রশেখরনের বক্তব্য, ‘‘মন্ত্রীদের চেয়ে আমলাদের হাতে বেশি ক্ষমতার বিষয়টি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর। কার্যবিধির এমন সশোধনে মন্ত্রীদের আপত্তি আছে। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।’’ রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী এবং জেডিএস নেতা কে কৃষ্ণকুট্টির মতে, ‘‘আমলা-নির্ভর হয়ে প্রশাসন চলবে না, এই নীতিতেই বামপন্থী সরকারের চলার কথা। সেখানে মন্ত্রীদের উপরে আমলাদের স্থান মেনে নেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রীও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসন চালাবেন, এটাই প্রতিষ্ঠিত নীতি এবং বিধি।’’

মন্ত্রিসভার ওই সাব-কমিটি গড়া হয়েছে রাজ্যের আইনমন্ত্রী এ কে বালনকে আহ্বায়ক এবং মুখ্যসচিব বিশ্বাস মেহতাকে সচিব করে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বালন অবশ্য বলছেন, ‘‘অতিমারি পরিস্থিতিতে অনেক কাজই ভার্চুয়াল মাধ্যমে করতে হচ্ছে। তার জন্য বিধির কিছু পরিবর্তন দরকার। সচিবেরা কিছু প্রস্তাব দিয়ে খসড়া রিপোর্ট তৈরি করেছেন। আমরা সেটা পর্যালোচনা করে মন্ত্রিসভার কাছে জমা দেব। গোটা বিষয়টি যে হেতু মন্ত্রিসভার কাজ সংক্রান্ত, তাই মন্ত্রিসভায় বিশদে আলোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নও আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন, মন্ত্রীদের অধিকার ‘খর্ব’ হবে, মন্ত্রিসভায় আলোচনার আগেই এমনটা ধরে নেওয়ার কারণ নেই। তবে বাম শিবিরের বিতর্ক থেকে বিরোধীরাও সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Ministers Power
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy