Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Kerala

‘সহমত নই’ বলেও ভাষণ পাঠ আরিফের

দেশের সংসদে পাশ হওয়া আইনের বিরোধিতা করে রাজ্য বিধানসভার এমন প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ বলে মত দিয়েছিলেন রাজ্যপাল আরিফ।

রাজ্যপালের ভাষণ বয়কট করে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউডিএফ বিধায়কদের বিক্ষোভ। তিরুঅনন্তপুরমে বুধবার বিধানসভা চত্ত্বরে।—নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যপালের ভাষণ বয়কট করে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউডিএফ বিধায়কদের বিক্ষোভ। তিরুঅনন্তপুরমে বুধবার বিধানসভা চত্ত্বরে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৯
Share: Save:

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে নিজের ভিন্নমত উল্লেখ করেই রাজ্য সরকারের তৈরি করে দেওয়া ভাষণ পাঠ করে গেলেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। রাজ্যপালের ভাষণ পাঠে এমন ঘটনা বেনজির হলেও শেষ পর্যন্ত সাংবিধানিক সঙ্কট এড়ানো গেল দক্ষিণী ওই রাজ্যে।

লিখিত ভাষণে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতা সংক্রান্ত অংশ পাঠ করার আগে বুধবার কেরলের বিধানসভায় রাজ্যপাল আরিফ উল্লেখ করেন, তিনি এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে তিনি মন্ত্রিসভার তৈরি করে দেওয়া বয়ানই পড়ে দিচ্ছেন। রাজ্যের পরিষদীয় দফতর অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যপালের মৌখিক ওই মন্তব্য সভার কার্যবিবরণীতে রাখা হবে না। শুধু লিখিত ভাষণই নথিভুক্ত হবে। রাজ্যপাল বিধানসভার অবমাননা করেছেন, এই অভিযোগে তাঁর ভাষণ বয়কট করে এ দিন বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়কেরা। রাজ্যপালকে ফেরত নেওয়ার দাবিতে প্রস্তাব আনতে চেয়ে কংগ্রেস আগেই নোটিস দিয়েছিল। তবে রাজ্যপাল শেষ পর্যন্ত সাংবিধানিক রীতির পুরোপুরি অন্যথা না করায় সেই প্রস্তাবের সম্ভাবনা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত।

সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব পাশ করেছিল কেরল বিধানসভা। তার পরে সে রাজ্যের সরকার ওই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছে। দেশের সংসদে পাশ হওয়া আইনের বিরোধিতা করে রাজ্য বিধানসভার এমন প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ বলে মত দিয়েছিলেন রাজ্যপাল আরিফ। বাজেট অধিবেশনের শুরুতে বিধানসভায় দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের ভাষণের বয়ানে সিএএ-র বিরুদ্ধে রাজ্যের পদক্ষেপের কথা লিখে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই বয়ানে আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্যপাল। সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেন, রাজ্য মন্ত্রিসভা ভাষণের যে বয়ান তৈরি করে দিয়েছে, কোনও সংযোজন বা বিয়োজন ছাড়া তিনি যেন তা-ই পাঠ করেন। শেষ পর্যন্ত এ দিন সকালে রাজ্যপাল মাঝামাঝি একটা পথ বেছে নিয়েছেন!

আরও পড়ুন: বয়কট করল উড়ান সংস্থা, কুণালের প্রশ্ন, ‘আমি কি হাঁটতে পারি মোদীজি’

তাঁর ভাষণে সিএএ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে যাওয়ার আগে এ দিন রাজ্যপাল আরিফ বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমার আপত্তি ছিল। এই বিষয়টি রাজ্য সরকারের নীতি সংক্রান্ত বক্তব্যের অংশ হতে পারে বলে মনে করি না। কিন্তু মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে এটা পড়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। আমি সহমত নই কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনেই আমি এই অনুচ্ছেদ পড়ছি।’’ পরে বিধানসভার স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিষদীয় মন্ত্রী এ কে বালন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যা বলেছেন, সেটা কার্যবিবরণীতে রাখার কথা নয়। তাঁর লিখিত বক্তৃতাই নথিতে থাকবে।’’

বিধানসভা কক্ষে ঢোকা ও বেরোনোর সময়ে এ দিন রাজ্যপালকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিরোধী ফ্রন্ট ইউডিএফের বিধায়কেরা। তাঁদের গলায় ছিল, ‘রাজ্যপালকে ফেরত নাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড। বাইরে বেরিয়ে রাজ্যপাল আরিফ অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘এটা তেমন কিছু ব্যাপারই নয়। রাজনীতিতে থাকার সময়ে আমি এর চেয়ে বড় বিক্ষোভ দেখেছি!’’ আর বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালার বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল একটা অসাংবিধানিক আইনের সমর্থন করতে গিয়ে বিধানসভার অবমাননা করেছেন। এত নীচে এঁরা নামছেন, ভাবা যায় না!’’ বাংলার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানেরও মত, ‘‘আমি সহমত নই, এটাও রাজ্যপাল বলতে পারেন না। এটা সাংবিধানিক রীতি বহির্ভূত। রাজ্য সরকারের বক্তব্য রাজ্যপালকে দিয়ে পড়ানো হয়, এটাই রীতি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Arif Mohammad Khan CAA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy