গত কয়েক মাস ধরেই কেরলের বাম সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সংঘাত চলছে। ছবি: পিটিআই।
কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে পিনারাই বিজয়ন সরকারের সংঘাত চরমে পৌঁছল। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপাল আরিফের অপসারণের জন্য বিল পাশ করল কেরল বিধানসভা। এই বিলে আপত্তি জানায়নি কেরলের বিরোধী জোট ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউ়ডিএফ)। তবে বিলে তাদের সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত না করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার অধিবেশন বয়কট করেছেন জোটের নেতা-নেত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর মঙ্গলবার কেরল বিধানসভায় তা পাশ হয়। স্পিকার এএন শমসীর ঘোষণা করেন, ‘‘বিল পাশ হয়েছে।’’ এই বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধান হিসাবে রাজ্যপালের পরিবর্তে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিযোগ করা হোক। কেরলে ক্ষমতাসীন জোট লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ)-এর আনা এই বিল নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জানিয়েছে, রাজ্যপালকে আচার্য পদ থেকে সরানোয় আপত্তি না থাকলেও ওই পদে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের এবং কেরল হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিদের নিয়োগ করা উচিত।
বিরোধীদের মতে, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা করে আচার্য নিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। তার পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং কেরল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত একটি প্যানেল আচার্য বাছাইয়ের কাজ করুক। যদিও এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছেন কেরলের আইনমন্ত্রী পি রাজীব। তাঁর মতে, আচার্য বাছাইয়ের প্যানেলে বিচারপতিদের রাখা উচিত নয়। তার বদলে স্পিকারকে প্যানেলে রাখা যেতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হওয়ার জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হওয়াটাই একমাত্র যোগ্যতা হতে পারে না।
বিরোধীদের দাবি, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বামপন্থী এবং মার্কসবাদীদের কেন্দ্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে কেরল সরকার। সে কারণেও অধিবেশন বয়কট করছেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই কেরলের বাম সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল আরিফের সংঘাত চলছে। অক্টোবরের শেষে কেরলের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-সহ অধ্যাপক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল। সে সময় কেরলের ৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে কেরল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরমে ওঠে। অন্য দিকে, পিনারাই বিজয়ন সরকারের দাবি ছিল, লোকায়ুক্ত সংশোধনী-সহ বেশ কিছু বিলে সম্মতি না দিয়ে আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল। আবার কেরল সিপিএমের অভিযোগ, আরএসএস এবং বিজেপির ‘হাতের পুতুল’ হিসাবে কাজ করছেন আরিফ। এমনকি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষাক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy