প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সংঘাতের আবহকে মাথায় রেখে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ কোনও দলীয় নেতাকে সর্বভারতীয় সভাপতি করার দাবি উঠেছে বিজেপির অন্দরমহলেই।
চলতি মাসেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে বর্তমান সভাপতি জেপি নড্ডার। তা ছাড়া, তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ায় সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। এ দিকে লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল হওয়ায় ধারাবাহিক ভাবে আরএসএস নেতৃত্ব দুষছেন বিজেপিকে। এই আবহে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ বিজেপির কোনও নেতাকে সভাপতি পদে বসানোর দাবি উঠেছে দলের মধ্যেই। সূত্রের দাবি, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন সুনীল বনশল, কেশব প্রসাদ মৌর্য, বিনোদ তাওড়ে, কে লক্ষ্মণেরা। অনুরাগ ঠাকুর ও স্মৃতি ইরানির নামও চর্চায় রয়েছে।
স্মৃতি ও অনুরাগ দু’জনেই গত মোদী মন্ত্রিসভায় ছিলেন। স্মৃতি অমেঠী থেকে হেরে গেলেও অনুরাগ জিতেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। সেই কারণে বিজেপিতে গুঞ্জন, দেশের যুব সমাজকে বার্তা দিতে অনুরাগের মতো যুব নেতাকে দল সভাপতি করার কথা ভাবছে। যদিও দলের অন্য অংশের মতে, হামিরপুরের সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের বিরুদ্ধে দলে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ রয়েছে। যার জেরে গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে হিমাচলে হেরে যায় বিজেপি। সূত্রের মতে, অন্তর্ঘাতের অভিযোগ ওঠায় মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছে অনুরাগকে। যদি তা-ই হয়, তা হলে সভাপতি হওয়া কঠিন অনুরাগের।
গুঞ্জন রয়েছে স্মৃতির নাম নিয়েও। দলের একাংশের বক্তব্য, প্রথম মহিলা সভাপতি হিসেবে তাঁকে বেছে নিতে পারে দল। কিন্তু স্মৃতির আচরণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেই। আরএসএস নেতৃত্ব যখন বিজেপি নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ নিয়ে সরব হচ্ছেন, তখন স্মৃতিকে সভাপতি করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া, স্মৃতি সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। যা তাঁর সভাপতি হওয়ার পথে বাধা।
সভাপতি হওয়ার প্রশ্নে সংগঠনের একাধিক নেতাও দৌড়ে রয়েছেন। যেমন জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনশল। তিনি দক্ষ সংগঠক। অতীতে সঙ্ঘের প্রচারক ছিলেন। সুনীল ২০১৪-২০২২ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে ওই রাজ্যে দু’টি লোকসভা ও দু’টি বিধানসভা-চারটি নির্বাচনে অনায়াসে জয় পেয়েছিল দল। এ বার ভোটের ফলে স্পষ্ট, উত্তরপ্রদেশে সংগঠন মজুবত করতে হবে দলকে। সেই কাজে সুনীল ‘মুখ’ হতে পারেন বলে করছেন অনেকেই। দু’বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা ও ওড়িশার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পান তিনি। পশ্চিমবঙ্গে ব্যর্থ হলেও, তেলঙ্গনা বিধানসভা নির্বাচনে দল দ্বিতীয় হয়েছে। আর লোকসভায় আসন দ্বিগুণ করেছে বিজেপি। ওড়িশায় সরকার গড়েছে। কিন্তু সুনীল অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ফলে তিনি সভাপতি হলে দলে শাহের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। যা আদৌ কাম্য নয় সঙ্ঘের কাছে।
এই দৌড়ে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যও। ওবিসি সমাজের ওই নেতা সঙ্ঘের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ফলে বিজেপি-সঙ্ঘ দূরত্ব মেটানোর প্রশ্নে তিনি সুযোগ্য ব্যক্তি হতে পারেন। উপরন্তু, তিনি ওবিসি সমাজের ‘মুখ’। ফলে সংরক্ষণ প্রশ্নে ওবিসি সমাজের ক্ষোভ মেটানোর প্রশ্নেও মৌর্য কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেন।
সভাপতি হওয়ার প্রশ্নে ‘কালো ঘোড়া’ হতে পারেন বিজেপির ওবিসি মোর্চার সভাপতি কে
লক্ষ্মণ। তেলঙ্গানার ওই ওবিসি নেতার রাজ্যে ভাল ফল করেছে বিজেপি। দলের একাংশ মনে করে, লক্ষ্মণ সভাপতি হলে তেলঙ্গনায় দলের শক্তি বাড়বে। তা ছাড়া, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে লক্ষ্মণকে সামনে রেখে এগোতে পারবে দল।
দলের এক অংশ আবার মনে করছে, আসন্ন মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সভাপতি করা হতে পারে ওবিসি নেতা বিনোদ তাওড়েকে। তিনি সঙ্ঘের কাছের লোক। মহারাষ্ট্রের তাওড়ে বিহারের লোকসভা নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন। ভাল ফল হওয়ায় দলে গুরুত্ব বেড়েছে তাওড়ের। এই মরাঠা নেতাকে জাতীয় সভাপতি করা হলে রাজ্যের মরাঠা ভোট এক করা সম্ভব হবে, আবার তাওড়ের ওবিসি পরিচয়কে সামনে তুলে ধরে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দেওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy