সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। —ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান। সোমবার পাক সেনেটের উচ্চকক্ষে সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘নিশান-ই-পাকিস্তান’ দেওয়ার প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে পাশ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ওই প্রস্তাবে গিলানির নামে ইসলামাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যলয়ের নামকরণ করতে বলা হয়েছে সরকারকে। সেই সঙ্গে, জাতীয় ও প্রাদেশিক স্তরে স্কুলের পাঠ্যবইতেও গিলানীর জীবনীকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই গৃহবন্দি ৯০ বছরের সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। উপত্যকায় এত দিন পাকিস্তানের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছিলেন বলে অনেকের অভিযোগ। কিন্তু গত মাসে আচমকাই হুরিয়তের নেতৃত্ব থেকে ইস্তফা দেন গিলানি। কাশ্মীরবাসীর স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে হুরিয়তের কিছু নেতা আর্থিক তছরুপে মেতে রয়েছেন এবং শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন বলে সেইসময় অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও সরাসরি কারও নাম মুখে আনেননি গিলানি। তবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে হুরিয়তের আহ্বায়ক গোলাম মহম্মদ সইফিকেই তিনি নিশানা করেন বলে জল্পনা শুরু হয়। পাকিস্তানের মেডিক্যাল কলেজে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে যে আসন সংরক্ষিত করা রয়েছে, তা বিক্রি করে মোটা টাকা কামানোর অভিযোগে একসময় সইফির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন গিলানি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চায় কংগ্রেস, অধিবেশন নিয়ে রাজ্যপাল-গহলৌত সঙ্ঘাত জারি
পাক সরকারের সঙ্গে সইফির দহরম মহরম বাড়তে থাকায়, হুরিয়ত প্রধান হিসেবে গিলানিকে ইসলামাবাদ সে ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছিল না বলেও জানা গিয়েছে। যে কারণে সৈয়দ গিলানি যখন মুজফ্ফরাবাদে হুরিয়তের শাখার দায়িত্ব আবদুল্লা গিলানির হাতে তুলে দেন, তাঁর সেই সিদ্ধান্ত পাক সেনার মনঃপুত হয়নি। আবদুল্লা গিলানি ও পাক সেনার মধ্যে একেবারেই সুসম্পর্ক ছিল না। তার জেরে এক বছরের মাথায় আবদুল্লাকে সরিয়ে ওই জায়গায় হুসেন মহম্মদ খাতিবকে আনা হয়, যিনি কিনা সইফির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন: কোন কোন ধরনের টেস্ট করা হয় কোভিডে, কারা করাবেন?
তার জেরেই সৈয়দ গিলানি শেষ মেশ হুরিয়ত ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন এবং পদত্যাগপত্রে আবদুল্লাকেই নিজের উত্তরসূরি বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু আচমকা তিনি সরে যাওয়ায় হুরিয়তের অন্দরে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপর প্রান্তেও তার রেশ গিয়ে পৌঁছেছে। গিলানিপন্থী এবং সইফিপন্থীদের মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে। গত মাসে উপত্যকায় আশরফ সেহরাইয়ের গ্রেফতারির পর সংগঠনে ঐক্য টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দিয়ে পাকিস্তান গিলানির মন জয় করার চেষ্টা করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy