মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব-আবেদন শুনতে নতুন বেঞ্চ গড়ছে সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
কর্নাটকের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে হিজাব পরার অনুমতি চেয়ে কয়েক জন মুসলিম ছাত্রীর আবেদনের শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ গড়বে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এ কথা জানিয়ে বলেছে, ‘‘তিন বিচারপতির বেঞ্চে আবেদনের পরবর্তী শুনানি হবে।’’
প্রাথমিক ভাবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ হোলির পরে শুনানির কথা জানিয়েছিল। কিন্তু আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘কর্নাটক সরকার পরীক্ষার দিন স্থির করেছেন। হলের ভিতর হিজাব পরে ঢোকা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। তাই আবেদনটির দ্রুত শুনানির আর্জি জানাচ্ছি।’’ এর পরেই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, তিন বিচারপতির নতুন বেঞ্চে মামলার শুনানি হবে।
আগামী ৯ মার্চ থেকে কর্নাটকের স্কুলগুলিতে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। আবেদনকারী পক্ষের দাবি, হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশ কয়েক জন ছাত্রী সরকারি স্কুল ছেড়ে বেসরকারি স্কুলে চলে গিয়েছে। তবে পরীক্ষা দিতে তাদের সরকারি স্কুলে যেতে হবে। হিজাব পরার অনুমতি না পেলে তাদের একটা বছর নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপিতে একটি প্রি-ইউনিভার্সিটিতে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সমস্ত স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত ২৬ জানুয়ারি কর্নাটক সরকার এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয়— কিছুই পরার অনুমতি নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েক জন ছাত্রী কর্নাটক হাই কোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন। তাঁরা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনও ভাবেই তা বাতিল করা যায় না। ১০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি রিতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি কেএস দীক্ষিত এবং বিচারপতি জেএম খাজি অন্তর্বর্তী রায়ে বলেন, ‘‘যত দিন না রায় ঘোষণা হচ্ছে, কর্নাটকে স্কুল-কলেজ খুলতে পারে কিন্তু কোনও পড়ুয়া ধর্মীয় প্রতীকমূলক কোনও পরিধান করে সরকারি স্কুল-কলেজে আসতে পারবেন না।’’
এর পর মার্চ মাসে কর্নাটক হাই কোর্ট মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে জানায়, ইসলামে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন নয়। এর পর আবেদনকারীরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু গত অক্টোবরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খণ্ডিত রায়’ দেওয়ায় মামলাটি এখন উচ্চতর বেঞ্চে গিয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় কর্নাটক সরকারের ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশ’ এখনও বহাল রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy