Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Karnataka High Court

নির্ভয়ার ঘটনার পর লেখা হয়েছিল, ‘শোনো দ্রৌপদী...!’ কেন কর্নাটক হাই কোর্টের মুখে ফিরল সেই কবিতা?

পুলিশ সূত্রের খবর, অশোক (২৪) এবং প্রিয়ঙ্কা (১৮), দুই তরুণ-তরুণী পরস্পরকে ভালবাসত। কিন্তু প্রিয়ঙ্কার বাড়ির লোকজন তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক করায় সে সোমবার দুপুরে অশোকের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

karnataka HC

কর্নাটক হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:০৮
Share: Save:

নির্ভয়ার ঘটনায় সারা দেশ যখন শিউরে উঠেছিল, কবি পুষ্যমিত্র উপাধ্যায় হিন্দিতে একটি কবিতা লিখেছিলেন— ‘শোনো দ্রৌপদী, হাতে অস্ত্র তুলে নাও! গোবিন্দ তোমাকে বাঁচাতে আসবে না।’ অতি পরিচিত কবিতার এই পংক্তিই এ বার শোনা গেল কর্নাটক হাই কোর্টের মুখে। বেলগাভিতে এক মহিলার উপরে নির্যাতনের মামলায় আজ প্রধান বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালে এবং বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিতের বেঞ্চ এই লাইনটি বলেই নীরব দর্শক হয়ে থাকা গ্রামবাসীদের সকলকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করা উচিত বলে মন্তব্য করল।

পুলিশ সূত্রের খবর, অশোক (২৪) এবং প্রিয়ঙ্কা (১৮), দুই তরুণ-তরুণী পরস্পরকে ভালবাসত। কিন্তু প্রিয়ঙ্কার বাড়ির লোকজন তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক করায় সে সোমবার দুপুরে অশোকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। তার পরেই প্রিয়ঙ্কার বাবা-মা এবং আত্মীয়স্বজনেরা অশোকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তার মাকে আক্রমণ করে। তাঁকে নগ্ন করে গ্রামে ঘুরিয়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাই কোর্ট এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, ‘‘এতগুলো লোক দাঁড়িয়ে দেখল, কিন্তু কেউ কিছুই করল না। এই সম্মিলিত কাপুরুষতার প্রতিবিধান দরকার। পুলিশ তো আর ব্রিটিশ আমলের নয়।’’ বর্তমান সময়ে ‘দুর্যোধন আর দুঃশাসনদের রাজত্ব’ চলছে বলে মন্তব্য করে বিচারপতিরা এর পরেই পুষ্যমিত্রর কবিতাটি উদ্ধৃত করেন। মনে রাখা যেতে পারে, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও এই ‘সুনো দ্রৌপদী’ কবিতাটি উদ্ধৃত করেছিলেন। পুষ্যমিত্র অবশ্য তার প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, তিনি চান না তাঁর কবিতা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রচারিত হোক। তবে নিপীড়িতদের প্রতি আহ্বান হিসেবে কবিতাটির বহুল ব্যবহার আছে। হাই কোর্টের নির্দেশেও আজ তারই প্রতিফলন দেখা গেল।

সেই সঙ্গে লর্ড বেন্টিঙ্কের আমলের একটি ঘটনার কথাও আজ উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি, যেখানে একবার গোটা গ্রামকে জরিমানা করা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়েই বিচারপতিরা বলেন, ‘‘গ্রামের সমস্ত মানুষকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত করা উচিত। কেউ বলতে পারেন, তিনি কিছু করেননি, তাঁকে শাস্তি কেন? কিন্তু তাই বলে নীরব দর্শক হয়ে থাকবেন? কেউ তো আটকাতে পারত! অন্যায়ে অংশ নেওয়ার চেয়ে কিছু কম বিপজ্জনক নয় এটা।’’ সমষ্টিগত ভাবে দায় এড়ানোর এই প্রবণতা রোখার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে তারা বলেছে, ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’ স্লোগান তোলাই যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি, ‘বেটা পড়াও’ অর্থাৎ পুরুষদের সচেতন করে তোলার লক্ষ্যও স্থির করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Karnataka High Court woman Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy