প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
দিনভর বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে সময় কাটানোর পরে দিল্লি ফিরে এসে কর্নাটক বিধানসভার দলীয় প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে বিজেপির সদর দফতরে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক শুরু হয়। যা চলে অনেক রাত পর্যন্ত। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, আগামিকালও বৈঠক চলবে। তার পর কাল অথবা পরশু প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হবে। ২২৪ আসনের কর্নাটক বিধানসভার ভোট হতে চলেছে ১০ মে। ফলপ্রকাশ ১৩ মে।
দক্ষিণের একমাত্র ভোটমুখী রাজ্য কর্নাটকে এ বার কঠিন লড়াইয়ের সামনে বিজেপি। অন্যান্য বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেখানে প্রার্থী ঘোষণার প্রশ্নে এগিয়ে থাকে তারা, সেখানে কর্নাটকে কংগ্রেস ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফার নাম ঘোষণা করে দেওয়া সত্ত্বেও বিজেপি তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শিগগাঁও আসনে লড়বন বলে স্থির হয়েছে। দলীয় সূত্রের মতে, হিমাচলে তড়িঘড়ি নাম ঘোষণায় হিতে বিপরীত হয়েছিল। যোগ্য প্রার্থীকে টিকিট না দেওয়ায় স্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে যে বিক্ষোভ হয়, তাতে ক্ষমতা হারাতে হয় বিজেপিকে। তার পুনরাবৃত্তি রুখতেই কর্নাটকে মেপে পা ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কারণে রাজ্য নেতৃত্ব আসনপিছু প্রার্থীদের নাম পাঠানোর পরেও ফের এক বার জেলা নেতৃত্বের কাছে নাম চেয়ে পাঠায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সূত্রের মতে, গত কাল অমিত শাহদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই, ইয়েদুরাপ্পাদের বৈঠকে প্রতি কেন্দ্র পিছু তিন জন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে আজ প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি করে নাম বেছে নেবে নির্বাচন কমিটি। তবে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার হাওয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় একাধিক কেন্দ্রে নতুন মুখকে টিকিট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রের মতে, ওই রাজ্যে লিঙ্গায়েত ভোটকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। ইয়েদুরাপ্পা হলেন লিঙ্গায়েত সমাজের নেতা। তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর পরে আর এক লিঙ্গায়েত নেতা বোম্মাইকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। কিন্তু তিনি লিঙ্গায়েতদের স্বার্থরক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে ফের ভোটের আগে ইয়েদুরাপ্পাকে সামনে নিয়ে আসা হয়।
সূত্রের মতে, মূলত কিট্টুর এলাকায় দলের ভাল ফল করার উপরে জোর দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। লিঙ্গায়েত অধ্যুষিত ওই এলাকার আওতায় বেলগাভি, হাভের, বিজয়পুরা, উত্তর কানাড়ার মতো সাতটি জেলা হল রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ বিধায়কের ঠিকানা। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘ওই এলাকায় জেডিএসের নামমাত্র উপস্থিতির কারণে কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হয়ে থাকে বিজেপির। মূলত ওই এলাকায় যারা ভাল ফল করে তারাই রাজ্যে ক্ষমতায় আসে। ২০১৮ সালে ওই এলাকায় ভাল করেছিল কংগ্রেস। তা যাতে আর না হয়, সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। লিঙ্গায়েত সমাজের মধ্যে তাঁর যা প্রভাব এখনও রয়েছে, তাতেই আশা রাখছে দল।’’ বিশেষ করে ভোটের আগে মুসলিম সমাজের মধ্যে থাকা ওবিসিদের সংরক্ষণ বাতিল করে লিঙ্গায়েতদের সংরক্ষণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দলের পক্ষে যাবে বলেই আশা করছেন বিজেপি নেতারা।
তবে দলকে চিন্তায় রেখেছে বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ। মন্ত্রিসভার সদস্যদের বড় অংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রায় দু’দশক ধরে কর্নাটকে ক্ষমতায় থাকায় রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার হাওয়াও প্রবল। এই জোড়া ধাক্কা সামলাতে গত বারের জেতা আসন থেকেও বড় সংখ্যক প্রার্থী বাদ পড়তে চলেছেন বলে খবর।
প্রশ্ন রয়েছে ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বিজয়েন্দ্রের লড়া নিয়েও। রাজ্য বিজেপির একাংশ চাইছেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার কেন্দ্র বরুণা থেকে লড়ুন বিজয়েন্দ্র। খোদ বিজয়েন্দ্রও তাই চান। কিন্তু গোড়াতেই ছেলেকে কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলতে নারাজ ইয়েদুরাপ্পা। এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তিনি চান তাঁর ছেলে তাঁর এলাকা শিবমোগা জেলার শিকারিপুরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়ুন। এবারের নির্বাচনে নিজে লড়ছেন না ইয়েদুরাপ্পা। তাই তিনি চাইছেন নিজের কেন্দ্র থেকেই ছেলেকে দাঁড় করাতে। যাতে ছেলের জয় নিশ্চিত হয়। সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকেও বিষয়টি দলকে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy