কর্নাটকের স্পিকার রমেশ কুমার। ফাইল চিত্র।
কোনও ভাবেই বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিজেদের বাগে আনতে পারছেন না কংগ্রেস-জেডিএস নেতৃত্ব। সময় যত গড়াচ্ছে কর্নাটকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। মঙ্গলবার সেই জটিলতাকে এক ধাক্কায় বাড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেসের পরিষদীয় বৈঠকে রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের হাজির না হওয়া এবং আরও এক বিধায়কের ইস্তফা। পরিস্থিতি সামলাতে গুলাম নবি আজাদকে বেঙ্গালুরুতে পাঠিয়েছেন সনিয়া গাঁধী। কর্নাটকের পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় সভা।
স্পিকার রমেশ কুমার কী বলবেন বা সিদ্ধান্ত নেবেন, এই ব্যাপারটা নিয়ে এ দিন সকাল থেকেই একটা টানটান উত্তেজনা ছিল গোটা রাজ্য জুড়ে। এ দিন দুপুরের দিকে তিনি জানান, কোনও বিক্ষুব্ধ বিধায়কই তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। বিষয়টা তিনি ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন। যে ১৩ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৮ জন আইন মেনে ইস্তফা দেননি। তাঁদের সময় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্পিকার। এ দিন সকালে তিনি জানিয়েছিলেন, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আলাদা আলাদা ভাবে এসে তাঁর কাছে এসে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে। স্পিকার বলেন, “কেউ যদি এ ব্যাপারে দেখা করতে চান, তা হলে আমার দফতরের অনুমতি নিয়েই আসতে হবে তাঁদের।” কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন চাপের মুখে পড়েই ইস্তফা দেওয়া হয়েছে, তা হলে সেই ইস্তফাপত্র গৃহীত হবে না বলেও জানান স্পিকার।
এ দিকে, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে এ দিন বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসেছিল কংগ্রেসের পরিষদীয় দল। কিন্তু সেই বৈঠকে গরহাজির ছিলেন রামলিঙ্গ রেড্ডি, অঞ্জলি নিম্বলকর, এস রামাপ্পা, রোশন বেগের মতো নেতারা। আরও বেশ কয়েক জন নেতাও অনুপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক চলাকালীনই ইস্তফা দেন বিধায়ক রোশন বেগ, দলবিরোধী কাজের জন্য যাঁকে আগেই কংগ্রেস বহিষ্কার করেছিল। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া বলেন, “স্পিকারের কাছে আমরা আর্জি জানিয়েছি ওই সব বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করতে হবে। শুধু তাই নয়, আগামী ৬ বছর যেন তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।”
আরও পড়ুন: হালিশহরে ফের ফুলবদল! ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম ধরা চেয়ারম্যান, কাউন্সিলররা ফের তৃণমূলেই
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক সোমশেখর জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই ইস্তফা ফিরিয়ে নেবেন না তাঁরা। তিনি বলেন, “আগামী পদক্ষেপ কী হবে, বিধায়করা একসঙ্গে বসে সেটা ঠিক করব। তার পর দু’এক দিনের মধ্যে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করব।” জেডিএস নেতা নারায়ণ গৌড়াও জোট সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, “এই সরকার কোনও কাজ করছে না। রাজ্যের কোনও উন্নতি হয়নি এই সরকারের আমলে। আর সেই প্রতিবাদেই পদত্যাগ করেছি।” রামলিঙ্গ রেড্ডি পরিষদীয় দলের বৈঠকে হাজির না থাকলেও তাঁর মেয়ে সৌমিয়া রেড্ডি সেখানে গিয়েছিলেন। কেন তাঁর বাবা বৈঠকে যাননি এবং কী কারণেই বা তিনি ইস্তফা দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে জানিয়েছেন সৌমিয়া। তিনি বলেন, “বাবা খুবই হতাশ। প্রত্যেকেই জানেন দলের ভূমিকায় মনে আঘাত পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কী ঘটনা ঘটেছে সেটাও সকলে জানেন।”
আরও পড়ুন: এআইসিসি গ্রহণ করল না পদত্যাগপত্র, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে সোমেনই
দিনভর নাটকের পরও আশা ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস-জেডিএস নেতৃত্ব। তাঁরা বার বারই দাবি করছেন সরকার সুরক্ষিত আছে। বিক্ষুব্ধদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জোট সরকারের নেতারা। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ‘মন জোগাতে’ এবং মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিতে সোমবারই ইস্তফা দেন দুই দলের সব মন্ত্রী। ঘোড়া কেনাবেচা যাতে না হয়, বিজেপির হাত থেকে বিধায়কদের বাঁচাতে গোপন আস্তানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরেও দলের একের পর এক বিধায়ক ইস্তফা দিচ্ছেন, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। তার পরেও এই সরকার কতটা সুরক্ষিত, সেটা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy