আসন পুনর্বিন্যাসে লোকসভার মোট আসন সংখ্যা বেড়ে গেলেও কোনও একটি রাজ্যের লোকসভা আসন সংখ্যার সঙ্গে মোট লোকসভা আসনের এখন যে অনুপাত রয়েছে, তা ভবিষ্যতে একই থাকবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের অভিযোগের জবাবে অমিত শাহ এই আশ্বাস দিলেও আজ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতারা তা খারিজ দেন। সিদ্দারামাইয়ার বক্তব্য, অমিত শাহের এই দাবি বিভ্রান্তিকর। তা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আগামী বছর তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ডিএমকে-প্রধান ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন নতুন করে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, জনগণনার পরে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলির আসন সংখ্যা কমে যাবে। কারণ উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ের তুলনায় দক্ষিণের রাজ্যগুলি শিক্ষা-স্বাস্থ্যে বেশি জোর দেওয়ায় তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। সেই হিসেবে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে লোকসভায় দক্ষিণের রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব ও রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা কমবে। প্রসঙ্গত, এই যুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গেও লোকসভা আসন কমে যাওয়ার কথা। এর জবাবেই অমিত শাহ বলেছিলেন, রাজ্যের লোকসভা আসনের সঙ্গে মোট আসনের অনুপাত একই থাকবে।
কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ের দাবি, অমিত শাহর দাবি তথ্যনির্ভর নয়। কর্নাটক, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশকে আসন পুনর্বিন্যাস করে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বহীন করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ১৯৭১-এর জনগণনার পরে শেষ আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছিল। ১৯৮১, ১৯৯১ সালের জনগণনার পরে আসন পুনর্বিন্যাস হয়নি। ২০০১-এর জনগণনার পরে আসন পুনর্বিন্যাস হলেও লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়েনি। ২০১১-র পরে ২০২১-এ জনগণনার কথা থাকলেও এখনও তা হয়নি। তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বি মহেশ কুমারের বক্তব্য, শাহের দাবি সত্ত্বেও আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তেলঙ্গানার বিআরএস নেতা কে টি রাও-এর যুক্তি, জনসংখ্যার ভিত্তিতে না করে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারে কোন রাজ্য থেকে কত টাকা আসছে, তার ভিত্তিতে আসন সংখ্যা নির্ধারণ হোক।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)