Advertisement
E-Paper

এক জীবনে দুই জন্ম তাঁর! অযোধ্যায় এসেই স্মৃতির পথে বাংলার অভয়, সঙ্গী আনন্দবাজার অনলাইন

আমন্ত্রণ পেয়ে অযোধ্যায় এসেছেন অভয় বার্নোয়াল। সোমবার মন্দির উদ্বোধনে অতিথি হিসাবে হাজির থাকবেন। অভয়ের দাবি, এই শহরেই তাঁর দ্বিতীয় জন্ম। গেলেন সেই হাসপাতালে।

Kar Sevak Abhay Barnwal revisited Sri Ram Hospital of Ayodhya temple

অযোধ্যায় পৌঁছেই সেই হাসপাতালে অভয় বার্নোয়াল। — নিজস্ব চিত্র।

পিনাকপাণি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৪
Share
Save

অভয় বার্নোয়াল। ১৯৯০ সালে করসেবক হিসাবে এসেছিলেন অযোধ্যায়। পুলিশের গুলি খেয়ে মরণাপন্ন অভয় প্রাণ পেয়েছিলেন অযোধ্যারই এক হাসপাতালে। এ বার এসেছেন বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে। প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার চিঠি পেয়েছেন। সেই ‘গর্বের’ চিঠি নিয়েই ঘুরলেন অযোধ্যায়। গেলেন সেই হাসপাতালে। যে রাস্তা দিয়ে পালানোর সময়ে গুলি খেয়েছিলেন সেখানেও। কিন্তু স্মৃতির অযোধ্যার সঙ্গে তো কিছুই মিলছে না। ৩৩ বছরেরও বেশি সময়। আগের ‘রাম-ভূমি’ যে অনেকটাই বদলে গিয়েছে।

বাংলায় থাকতেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা হয়েছিল অভয়ের। শুনিয়েছিলেন তাঁর প্রথম বার অযোধ্যায় আসার স্মৃতি। অযোধ্যার পথে রওনা দেন করসেবক হিসাবে। অনেক বাধা পেরিয়ে পৌঁছেও যান। উঠে যান একেবারে সৌধের মাথায়। পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জন করসেবকের। আরও অনেকের সঙ্গে গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন অভয়। সে বার বারণসী স্টেশন থেকে সাড়ে ৩০০ কিলোমিটার জঙ্গলের পথ হেঁটে এসেছিলেন অযোধ্যায়। শুনিয়েছিলেন সেই কাহিনিও।

ঘটনচক্রে এ বারেও অযোধ্যা আসতে অনেক ভোগান্তি হয়েছে অভয়ের। কলকাতা স্টেশন থেকে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে চেপে বসেছিলেন। ঠিক ছিল শনিবার সকালে অযোধ্যা ধাম স্টেশনে নেমে পড়বেন। কিন্তু বারাণসী এসে জানতে পারেন ট্রেন অন্য দিকে চলে যাবে। অযোধ্যা ধামে সরাসরি যাওয়া যাবে না। একটা ট্রেন ধরে সুলতানপুর চলে যান। সেখান থেকে গাড়িতে করে অযোধ্যায় যখন আসেন, তখন শনিবার দুপুর হয়ে গিয়েছে। করসেবকপুরমে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে তাঁর। ব্যাগ রেখেই সোজা চলে আসেন শ্রীরাম হাসপাতালে (আসল নাম শ্রীরাম চিকিৎসালয়)। বললেন, ‘‘কিছুই চিনতে পারছি না। এত বড় ছিলই না হাসপাতালটা। সেই সময়ের কেউ নেইও হয় তো।’’ এ দিক-ও দিক ঘুরে নিজের থেকেই হাসপাতালে থাকা লোকজনকে নিজের পরিচয় দিলেন। এর পরে তাঁর খাতির শুরু হল। এগিয়ে এলেন এক পুলিশকর্মীও। অভয় বলে চলেছেন, ‘‘আমি তো ভেবেছি মরেই গিয়েছি। প্রথমে কোনও একটা মন্দিরে নিয়ে গিয়েছিল। সেটা চিনতে পারব না। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এই হাসপাতাল। এখানেই আমার জ্ঞান আসে। তার পরে জখম গুরুতর বলে ফৈজাবাদ হাসাপাতালে পাঠিয়ে দেয়। প্রচুর রক্ত ঝরেছিল এই হাসপাতালেই।’’

পুরনো দিনের কাহিনি শুনতে শুনতে অনেকেই নানা প্রশ্ন করলেন। এখন কী করেন, কবে এসেছেন, কোথায় থাকবেন এমনই সব প্রশ্ন। এর আগে ১৯৯২ সালে করসেবা করতে আর ১৯৯৩ সালে রামলালাকে পুজো দিতে অযোধ্যায় এসেছেন অভয়। তবে হাসপাতালে আসেননি। এ বার কেন এলেন? আসানসোলে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের ব্যবসায়ী অভয় বললেন, ‘‘আসলে এর আগে এসেছি যখন, তখনও মন্দির তৈরির স্বপ্নপূরণ হয়নি। এ বার হয়েছে। তাই মন অনেক শান্ত। অনেক আনন্দ নিয়ে পুরনো অলিগলি ঘুরতে ইচ্ছা করছে। এমন একটা দিনের জন্যই তো এত কষ্ট এত মানুষ করেছেন। আমার দুটো পা ছোট-বড় হয়ে গিয়েছে।’’

এর পরে ‘শহিদ মার্গ’ গেলেন অভয়। সে রাস্তাও এখন অন্য রকম। কলকাতা থেকে করসেবায় আসা দুই ভাই রাম ও শরদ কোঠারি পুলিশের গুলি খেয়ে এই রাস্তাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। অন্য রাজ্যের আরও কয়েক জন ছিলেন। পরে এ রাস্তার নাম তাঁদের স্মৃতিতেই হয়। ‘শহিদ’ হননি অভয়। তবে অনেক দিন ভুগতে হয়েছিল। বললেন, ‘‘সেই সময়ে যাঁরা গুলি খেয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে সম্ভবত আমি একাই বেঁচে আছি। আসলে আমার বয়স ছিল তখন মাত্র ২০।’’

তবে ঠিক যেখানে গিয়েই তিনি ‘খ্যাত’ হয়েছিলেন সেখানে যাওয়া হল না। সেই জায়গাতেই তো নতুন মন্দির হচ্ছে। অভয় অযোধ্যা পৌঁছানোর আগেই সেখানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রামলালার দর্শনও করতে পারলেন না। এখন তিনি অপেক্ষায় সোমবারের জন্য। দেখবেন রামলালাকে। সঙ্গে, নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ এবং মোহন ভাগবতকে। অভয় বললেন, ‘‘এই তিন জনই আমার কাছে ভগবানের মতো। এঁরাই তো দীর্ঘ লড়াইয়ের স্বপ্ন সফল করেছেন।’’ অভয় এর পরে সরযূ নদীর দিকে চললেন। এই নদীর পারেও তাঁর অনেক স্মৃতি। যাওয়ার আগে বললেন, ‘‘সোমবারের জন্য বিশেষ পোশাক বানিয়েছি। কুর্তা, পাজামার সঙ্গে পাগড়ি পরব। গলায় থাকবে বিশেষ উত্তরীয়। আর একটা রাজকীয় জ্যাকেট। দেখে মনে হবে রাজা রামের রাজ্যাভিষেকে এসেছি।’’

Ram Mandir Inauguration Ayodhya Ayodhya Ram Mandir Ayodhya Ram Temple

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।