Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National news

ক্লাস টেনে পড়াশোনায় ইতি, সারাতেন রেডিয়ো, এখন বিখ্যাত অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানির মালিক ইনি!

ভারতের প্রথম অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি এটি। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে এর যথেষ্ট নামডাক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ১২:০৩
Share: Save:
০১ ১৬
২৯ বছরের পুরনো অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি কুইক হিল টেকনোলজিস। ভারতের প্রথম অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি এটি। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে এর যথেষ্ট নামডাক। বিভিন্ন সংস্থা, বহু মানুষ ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্যও কুইক হিলে ভরসা করেন।

২৯ বছরের পুরনো অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি কুইক হিল টেকনোলজিস। ভারতের প্রথম অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি এটি। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে এর যথেষ্ট নামডাক। বিভিন্ন সংস্থা, বহু মানুষ ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্যও কুইক হিলে ভরসা করেন।

০২ ১৬
কিন্তু জানেন, কী ভাবে কুইক হিল তৈরি হল? আর কে তৈরি করলেন? না, বড় কোনও নাম নয়, কুইক হিলের কথা প্রথম মাথায় এসেছিল দশম শ্রেণিতে ফেল করা এক যুবকের! তাঁর পরিকল্পনাতেই কুইক হিলের জন্ম।

কিন্তু জানেন, কী ভাবে কুইক হিল তৈরি হল? আর কে তৈরি করলেন? না, বড় কোনও নাম নয়, কুইক হিলের কথা প্রথম মাথায় এসেছিল দশম শ্রেণিতে ফেল করা এক যুবকের! তাঁর পরিকল্পনাতেই কুইক হিলের জন্ম।

০৩ ১৬
দশম শ্রেণি ফেল এবং তার পর শিশুশ্রমিকের কাজ করা ওই যুবকই প্রতিষ্ঠা করেন ‘কুইক হিল’। তিনিই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার। নাম কৈলাস কাটকর। মহারাষ্ট্রের ছোট্ট একটা গ্রাম থেকে আজ বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।

দশম শ্রেণি ফেল এবং তার পর শিশুশ্রমিকের কাজ করা ওই যুবকই প্রতিষ্ঠা করেন ‘কুইক হিল’। তিনিই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার। নাম কৈলাস কাটকর। মহারাষ্ট্রের ছোট্ট একটা গ্রাম থেকে আজ বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।

০৪ ১৬
১৯৬৬ সালে কৈলাসের জন্ম মহারাষ্ট্রের রহমিতাপুর নামে এক গ্রামে। তিন ভাইবোন আর বাবা-মা, পাঁচ জনের সংসারে অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন বাবা। তিনিও ভাল কিছু করতেন না।

১৯৬৬ সালে কৈলাসের জন্ম মহারাষ্ট্রের রহমিতাপুর নামে এক গ্রামে। তিন ভাইবোন আর বাবা-মা, পাঁচ জনের সংসারে অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন বাবা। তিনিও ভাল কিছু করতেন না।

০৫ ১৬
একটি ইলংকট্রনিক্স সরঞ্জাম তৈরির সংস্থায় ছোটখাটো কাজ করতেন কৈলাসের বাবা। কখনও পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে এই কোম্পানির বাল্‌ব্‌ বিক্রি করতেন। রোজ যা আয় করতেন, সে দিনের খাওয়া খরচেই তা শেষ হয়ে যেত। তার উপর কৈলাসও তখন ছোট ছিলেন। স্কুলে পড়তেন। তাই বাবার ভরসাও হয়ে উঠতে পারেননি।

একটি ইলংকট্রনিক্স সরঞ্জাম তৈরির সংস্থায় ছোটখাটো কাজ করতেন কৈলাসের বাবা। কখনও পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে এই কোম্পানির বাল্‌ব্‌ বিক্রি করতেন। রোজ যা আয় করতেন, সে দিনের খাওয়া খরচেই তা শেষ হয়ে যেত। তার উপর কৈলাসও তখন ছোট ছিলেন। স্কুলে পড়তেন। তাই বাবার ভরসাও হয়ে উঠতে পারেননি।

০৬ ১৬
দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনওক্রমে পড়েছেন কৈলাস। পড়াশোনায় একেবারেই ভাল ছিলেন না। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরই বাবা তাঁর পড়াশোনা ছাড়িয়ে দেন। বাবাকে সাহায্য করতে কৈলাসও ওই ছোট্ট বয়সে কাজে যোগ দেন।

দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনওক্রমে পড়েছেন কৈলাস। পড়াশোনায় একেবারেই ভাল ছিলেন না। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরই বাবা তাঁর পড়াশোনা ছাড়িয়ে দেন। বাবাকে সাহায্য করতে কৈলাসও ওই ছোট্ট বয়সে কাজে যোগ দেন।

০৭ ১৬
এই মেধা নিয়ে আর ভাল কোনও কাজ পেতেন না, তাই স্থানীয় একটি রেডিয়ো এবং ক্যালকুলেটর মেরামতির দোকানে যোগ দেন তিনি। হাতে হাতে অন্যদের থেকে একটু একটু করে কাজ শিখতে শিখতেই বৈদ্যুতিন যন্ত্রের উপর আগ্রহ জন্মায় তাঁর।

এই মেধা নিয়ে আর ভাল কোনও কাজ পেতেন না, তাই স্থানীয় একটি রেডিয়ো এবং ক্যালকুলেটর মেরামতির দোকানে যোগ দেন তিনি। হাতে হাতে অন্যদের থেকে একটু একটু করে কাজ শিখতে শিখতেই বৈদ্যুতিন যন্ত্রের উপর আগ্রহ জন্মায় তাঁর।

০৮ ১৬
এর মধ্যে দোকানের মালিক কৈলাসকে কম্পিউটার মেরামতির প্রাথমিক প্রশিক্ষণও দেন। কৌতুহলের জেরেই কম্পিউটার মেরামতিটা বেশ আয়ত্তে করে নেন তিনি। নিজের তো আর পড়াশোনা হয়ে ওঠেনি, কিন্তু ভাই সঞ্জয়কে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েই পড়তে জোর করেন। পুণের মডার্ন কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হন সঞ্জয়। ভাইয়ের পড়াশোনায় আর্থিক সাহায্য করতেন তিনি।

এর মধ্যে দোকানের মালিক কৈলাসকে কম্পিউটার মেরামতির প্রাথমিক প্রশিক্ষণও দেন। কৌতুহলের জেরেই কম্পিউটার মেরামতিটা বেশ আয়ত্তে করে নেন তিনি। নিজের তো আর পড়াশোনা হয়ে ওঠেনি, কিন্তু ভাই সঞ্জয়কে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েই পড়তে জোর করেন। পুণের মডার্ন কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হন সঞ্জয়। ভাইয়ের পড়াশোনায় আর্থিক সাহায্য করতেন তিনি।

০৯ ১৬
১৯৯০ সালে উপার্জনের ১৫ হাজার টাকা দিয়ে পুণেতে নিজের একটা কম্পিউটার মেরামতির দোকান খুলে ফেলেন। এটাই ছিল তাঁর ২৯ বছরের জার্নির প্রথম ধাপ। এর পাশাপাশি কম্পিউটার সংক্রান্ত জ্ঞান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতেও শুরু করেন।

১৯৯০ সালে উপার্জনের ১৫ হাজার টাকা দিয়ে পুণেতে নিজের একটা কম্পিউটার মেরামতির দোকান খুলে ফেলেন। এটাই ছিল তাঁর ২৯ বছরের জার্নির প্রথম ধাপ। এর পাশাপাশি কম্পিউটার সংক্রান্ত জ্ঞান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতেও শুরু করেন।

১০ ১৬
১৯৯৩ সালে ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করেন। কম্পিউটার মেরামতি দোকানের পাশাপাশি ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস নামে তাঁর এই সংস্থা বিভিন্ন অফিসের কম্পিউটার দেখভালের চুক্তি নিতে শুরু করে। এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার কয়েক মাস পরেই সাফল্য আসে। নিউ ইন্ডিয়া ইনসুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় তাঁর।

১৯৯৩ সালে ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করেন। কম্পিউটার মেরামতি দোকানের পাশাপাশি ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস নামে তাঁর এই সংস্থা বিভিন্ন অফিসের কম্পিউটার দেখভালের চুক্তি নিতে শুরু করে। এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার কয়েক মাস পরেই সাফল্য আসে। নিউ ইন্ডিয়া ইনসুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় তাঁর।

১১ ১৬
সে সময় ইন্টারনেটের চল বাড়তে শুরু করেছে। খুব ভাল করেই কৈলাস বুঝতে পারছিলেন, ভবিষ্যতে কম্পিউটারের জন্য একটা বড় সমস্যা আসতে চলেছে কম্পিউটার ভাইরাস। তার পরই ভাইরাসদের কাবু করার কাজ শুরু করেন কৈলাস।

সে সময় ইন্টারনেটের চল বাড়তে শুরু করেছে। খুব ভাল করেই কৈলাস বুঝতে পারছিলেন, ভবিষ্যতে কম্পিউটারের জন্য একটা বড় সমস্যা আসতে চলেছে কম্পিউটার ভাইরাস। তার পরই ভাইরাসদের কাবু করার কাজ শুরু করেন কৈলাস।

১২ ১৬
নিজের সংস্থা ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস-এর জন্য ভাই সঞ্জয়কে অ্যান্টিভাইরাসের একটি বেসিক মডেল বানাতে বলেন তিনি। এই ভাবেই জন্ম হয় অ্যান্টিভাইরাস ‘কুইক হিল’-এর।

নিজের সংস্থা ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিস-এর জন্য ভাই সঞ্জয়কে অ্যান্টিভাইরাসের একটি বেসিক মডেল বানাতে বলেন তিনি। এই ভাবেই জন্ম হয় অ্যান্টিভাইরাস ‘কুইক হিল’-এর।

১৩ ১৬
১৯৯৪ সালে প্রথম মুক্তি পায় ‘কুইক হিল’। প্রথম দিকে মাত্র ৭০০ টাকায় ভেন্ডরদের এই অ্যান্টিভাইরাস বিক্রি করছিলেন তাঁরা। সে সময় যতগুলো অ্যান্টিভাইরাস ছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে সস্তা ছিল ‘কুইক হিল’-ই।

১৯৯৪ সালে প্রথম মুক্তি পায় ‘কুইক হিল’। প্রথম দিকে মাত্র ৭০০ টাকায় ভেন্ডরদের এই অ্যান্টিভাইরাস বিক্রি করছিলেন তাঁরা। সে সময় যতগুলো অ্যান্টিভাইরাস ছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে সস্তা ছিল ‘কুইক হিল’-ই।

১৪ ১৬
কিন্তু সস্তা হওয়া সত্ত্বেও কেউই অ্যান্টিভাইরাস কিনতে রাজি হচ্ছিল না। তার পর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিনামূল্যে এই অ্যান্টিভাইরাস দেওয়ার। তাতে কাজও হয়। বিনামূল্যে অনেকেই ‘কুইক হিল’ নিয়ে নেন। ‘কুইক হিল’-এর প্রয়োগ দেখে ক্রমে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে।

কিন্তু সস্তা হওয়া সত্ত্বেও কেউই অ্যান্টিভাইরাস কিনতে রাজি হচ্ছিল না। তার পর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিনামূল্যে এই অ্যান্টিভাইরাস দেওয়ার। তাতে কাজও হয়। বিনামূল্যে অনেকেই ‘কুইক হিল’ নিয়ে নেন। ‘কুইক হিল’-এর প্রয়োগ দেখে ক্রমে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে।

১৫ ১৬
এই মুহূর্তে ‘কুইক হিল’ বিশ্বের ৬০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাপান, আমেরিকা, দুবাই-সহ বিশ্বব্যাপী ৩১টি অফিস রয়েছে তাঁদের। মার্কিন কোম্পানি ম্যাকাফে এবং সিমেনটেকও সে দেশেই জোর টক্কর দিয়েছে প্রতিযোগিতায়।

এই মুহূর্তে ‘কুইক হিল’ বিশ্বের ৬০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাপান, আমেরিকা, দুবাই-সহ বিশ্বব্যাপী ৩১টি অফিস রয়েছে তাঁদের। মার্কিন কোম্পানি ম্যাকাফে এবং সিমেনটেকও সে দেশেই জোর টক্কর দিয়েছে প্রতিযোগিতায়।

১৬ ১৬
২০০৭ সালে ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিসের নাম বদলে ‘কুইক হিল টেকনোলজিস’ রাখেন তিনি। ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা সামলাচ্ছেন তিনি। স্কুলছুট ছেলেও যে একদিন জনপ্রিয় কম্পিউটার অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানির মালিক হতে পারেন, তার আদর্শ উদাহরণ হয়ে রয়ে গিয়েছেন কৈলাস কাটকর।

২০০৭ সালে ক্যাট কম্পিউটার সার্ভিসের নাম বদলে ‘কুইক হিল টেকনোলজিস’ রাখেন তিনি। ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা সামলাচ্ছেন তিনি। স্কুলছুট ছেলেও যে একদিন জনপ্রিয় কম্পিউটার অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানির মালিক হতে পারেন, তার আদর্শ উদাহরণ হয়ে রয়ে গিয়েছেন কৈলাস কাটকর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy