সাংবাদিক পিরজাদা আশিক। ছবি: সংগৃহীত।
সাংবাদিক স্বামী সরকারি সিদ্ধান্ত ও নীতির সমালোচনা করে প্রতিবেদন লেখেন, সেই ‘অপরাধে’ দীর্ঘ ১২ বছরের কর্মক্ষেত্র থেকে বরখাস্ত হলেন স্ত্রী। সম্প্রতি কাশ্মীরে এই ঘটনাটি ঘটেছে একটি বিশিষ্ট সংবাদপত্রের সাংবাদিক পিরজ়াদা আশিকের স্ত্রী মাশরত ইউসুফের সঙ্গে। ২০১১ সাল থেকে শ্রীনগর পৌরসভায় মিডিয়া অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরতা ছিলেন মাশরত। এই প্রথম এত দীর্ঘকালের কোনও সরকারি কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হল।
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করে সেটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ৩৭০ ধারা বাতিল করার অর্থ বিশেষ মর্যাদা আর থাকছে না জম্মু-কাশ্মীরের। তার পর থেকেই উপত্যকার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতা সুলভ আচরণের টানা সমালোচনা করে গিয়েছেন আশিক। স্বাভাবিক ভাবেই বহু বার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কখনও কখনও তিনি কী লিখেছেন তা বিশ্লেষণও করতে বলা হয়েছে।
তবে এই পরিণতি শুধু আশিকের নয়, ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর থেকেই উপত্যকার সাংবাদিকদের উপরে নেমে এসেছে কেন্দ্রের কোপ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাঁদের ভয় দেখানো ও হেনস্থা করার অভিযোগের সংখ্যা। একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গত দু’বছরে ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্যাকগ্রাউন্ড চেকিংয়ের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। না বলে হানা দেওয়া হয়েছে একাধিক সাংবাদিকের বাড়িতে ও কর্মক্ষেত্রে। নিজের প্রতিবেদন বা সমাজমাধ্যমের পোস্ট অক্ষরে অক্ষরে অর্থ ও ভাবার্থ বুঝিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন পুলিশকে, রয়েছেন এমন সাংবাদিকেরাও। কেন্দ্রের এমন শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবে ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত উপত্যকার সাংবাদিক মহল।
পাশাপাশি, ‘দেশবিরোধী’ কাজকর্মের ছিটেফোঁটা ‘প্রমাণ’ পেলেই কর্মচারীদের ছাঁটাই করছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার। এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ জনের চাকরি গিয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ২০২০ সালের ৩০ জুলাই তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ কমিটি। গত অগস্ট মাসেই একটি জঙ্গিচক্র দমনের ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছেন উপত্যকার উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিক আসবা-উল-অরজামন্দ খান। তিনি জম্মু ও কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের সদস্য বিট্টা কারাটের স্ত্রী। পাশাপাশি চাকরি গিয়েছে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন অধ্যাপক ও এক বিজ্ঞানীর। একই সঙ্গে চাকরি গিয়েছে আইটি জেকেইডিআইয়ের ম্যানেজার সৈয়দ আবদুল মুইদের। তাঁর বাবা সৈয়দ সালাউদ্দিন হিজবুলের প্রধান হওয়ায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy