Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Joshimath Disaster

জোশীমঠ নিয়ে মুখ খুলতে মানা নির্দেশিকায়

ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টারের (এনআরএসসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যে প্রতিবেদন ঘিরে শুক্রবার হইচই পড়ে যায়, তাতে ১১ জানুয়ারি, বুধবারের তারিখ দেওয়া ছিল।

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ধসের প্রভাব প্রথম নজর টানে ২০২১ সালের অক্টোবরে।

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ধসের প্রভাব প্রথম নজর টানে ২০২১ সালের অক্টোবরে। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

জোশীমঠে পায়ের নীচের মাটি হঠাৎ করে সরে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছিল দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি প্রতিবেদনে। তা সামনে আসার পরেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ ফরমান জারি করলেন। তাতে বলা হয়েছে, সংস্থার ‘নিজস্ব ব্যাখ্যা’ উপদ্রুত জায়গা তো বটেই, সারা দেশের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। মাটি বসে যাওয়া নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে বা সমাজমাধ্যমে কিছু প্রকাশ করতে বারণ করা হয়েছে সরকারি সংস্থাগুলিকে। এ দিকে, যে প্রতিবেদন ঘিরে এই চাপানউতোর, শনিবার থেকে সরকারি ওয়েবসাইটে সেটি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টারের (এনআরএসসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যে প্রতিবেদন ঘিরে শুক্রবার হইচই পড়ে যায়, তাতে ১১ জানুয়ারি, বুধবারের তারিখ দেওয়া ছিল। কার্টোস্যাট-২এস উপগ্রহের পাঠানো ছবি প্রকাশ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জোশীমঠ-আউলি রাস্তায় ভূমিধসের পরিচিত রূপ শনাক্ত হয়েছে। উপগ্রহচিত্রে জোশীমঠ শহরের কেন্দ্রে ধসের সেই এলাকার মধ্যে সেনার হেলিপ্যাড এবং নরসিংহ মন্দির স্পষ্ট চেনা যাচ্ছিল।

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ধসের প্রভাব প্রথম নজর টানে ২০২১ সালের অক্টোবরে। পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠার শুরু ২০২২ সালের শেষে। পরিবেশবিদ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সুড়ঙ্গ খুঁড়ে চলা যন্ত্র আটকে যাওয়ায় অনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ করা হচ্ছে। তার পর থেকেই লক্ষ করা যাচ্ছে নতুন নতুন ফাটল। কিন্তু ওই কাজ করা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসি অভিযোগ অস্বীকার করছে।

গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০১৩ আর ২০২১ সালের বন্যা আর ২০২১ সালের শেষে ফের একদিনে অতিভারী বৃষ্টি ভূমিধস-পরিস্থিতি ঘোরালো করেছে। এ দিকে, এনআরএসসির প্রতিবেদনটিতে বলা ছিল, গত এপ্রিল থেকে সাত মাস ধরে জোশীমঠের মাটি বসেছিল ৯ সেন্টিমিটার। গত ২৭ ডিসেম্বরের পর থেকে ১২ দিনের মধ্যে হঠাৎই ৫.৪ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতিতে প্রতিবেদনে বলা ছিল, ২ জানুয়ারি আচমকা বড় ধস টের পাওয়া গিয়েছিল।

এর পরেই বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের চিঠি গিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক হয়। সেখানে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জোশীমঠের ধসের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়েছে, তা উল্লেখ করে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-সহ বিভিন্ন সংস্থাকে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘‘সংবেদনশীলতা’’ গড়ে তুলতে। যত দিন না জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, বিভিন্ন সংস্থা যেন সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত কিছু প্রকাশে বিরত থাকে।

উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ধন সিংহ রাওয়ত একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটি সামনে আসার পরে তিনি এনআরএসসি-র ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলেছেন। জানতে চেয়েছিলেন, জোশীমঠ সংক্রান্ত ওই বক্তব্য সংস্থাটির সরকারি বিবৃতি কি-না। মন্ত্রীর দাবি, সেটি সংশোধন করা হবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল। এ দিকে, এনআরএসসি-র ডিরেক্টর প্রকাশ চৌহানের সঙ্গে শনিবার দিনভর চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এনআরএসসি-র এক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, ওই প্রতিবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খ বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষা করে তৈরি। কিন্তু ‘অপব্যাখ্যা’ হতে থাকায় তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকা প্রসঙ্গে তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘ওরা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে অন্য একটির উপরে আঘাত হানছে। এ বার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ ইসরোকে মুখ বন্ধ করতে বললেন। কিন্তু উপগ্রহচিত্র কী করে মিথ্যা হতে পারে? এটাই নতুন ভারত, যেখানে শুধু এক জনই সমস্তটা জানেন, আর কোনও ব্যাপারে কে বলবে না-বলবে ঠিক করেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Joshimath Disaster Joshimath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy