সোনাঝরিয়া মিন্জ।
তখন সন্ধ্যা প্রায় ৭টা। সাবরমতী বাস স্টপ থেকে গোদাবরী বাস স্টপ হেঁটে যাওয়ার সময়ে প্রথম চোখে পড়ল ভিড়টা। প্রত্যেকের হাতে লাঠি বা রড। চিৎকার করে হুমকি দিয়ে চলেছে এক টানা। হঠাৎই বড় বড় ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করল সেই লোকগুলো। মাথা বাঁচাতে আমি তখন আশ্রয়ের খোঁজে ফের বাস স্টপেজের দিকে হাঁটা দিই। সহকর্মী কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াকেও সেখানে দেখলাম।
তখন বৃষ্টির মতো পাথর পড়ছে। দু’হাতে মাথা আড়াল করে ছুটোছুটি করছি। একটা বেশ বড় মাপের পাথর এসে লাগল কোমরের বাঁ দিকে। যন্ত্রণায় থমকে গেলাম। সেই ভিড় এ বার আমার চার পাশে। সাঁই সাঁই লাঠি ঘোরাচ্ছে তারা। এক জন লাঠি দিয়ে আমার বাঁ পায়ে পর পর কয়েক ঘা কষিয়ে দিয়ে গেল। ফুট পাঁচেক দূরে এক জন শিক্ষককে মাটিতে ফেলে বেদম পেটাচ্ছে কয়েক জন। শিক্ষক ওঠার চেষ্টা করা মাত্র তাঁকে মেরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে আবার। হঠাৎই এক জন বলল, ‘এ তো সে নয়’। আর এক জন তাকে সমর্থন করল, ‘সে নয়, এটা সে নয়’। বাকিরা তখন ওই শিক্ষককে ছেড়ে দৌড়ে এগিয়ে গেল।
আরও দুই শিক্ষিকাকে তখন আমার চোখে পড়ল। তাঁদেরও পিটিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এক জনের ডান পায়ে এমন লেগেছে, তিনি এক পা-ও হাঁটতে পারছেন না। আর এক জনও যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। দেখলাম আবার ফিরে এল লাঠিধারীরা। এ বার আামদের বাদ দিয়ে তারা আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলির কাচ ভাঙতে শুরু করল। দমাদ্দম লাঠি পড়ছে গাড়ির বনেটে। সব চেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা, ক্যাম্পাসে মোতায়েন নিরাপত্তা রক্ষীদের কোথাও চোখে পড়ল না। দুষ্কৃতীরা দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে। তার আগে রড-লাঠি হাতে জড়ো হয়েছে। কোথায় ছিলেন রক্ষীরা, কেন সে সব তাঁদের চোখে পড়ল না, সেটাই প্রশ্ন।
(লেখিকা জেএনইউ-এর কম্পিউটার ও সিস্টেমস সায়েন্সেস-এর অধ্যাপিকা)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy