Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

হামলা নিয়ে মুখে কুলুপ মোদী-শাহের

বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী-অমিতের তত্ত্বাবধানেই হামলাকারীরা বাইরে থেকে জেএনইউয়ে ঢুকেছিল।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২৭
Share: Save:

প্রথম সারির শিল্পপতিদের সঙ্গে দেখা করলেন। সপরিবার তেলুগু অভিনেতা মোহনবাবুর সঙ্গে ঘটা করে ছবিও তুললেন। সন্ধেয় দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও বেরোলেন। কিন্তু জেএনইউয়ে ছাত্র-শিক্ষক পেটানো নিয়ে টুঁ শব্দ করলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আর তাঁর সেনাপতি অমিত শাহ? তাঁর অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের নাকের ডগায় গোটা ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তবু জেএনইউয়ের ঘটনা নিয়ে তিনিও কোনও মন্তব্য করলেন না। গত কালের পর আজও অবশ্য ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’কে জেলে পাঠানোর কথা বলতে ভোলেননি তিনি। ভোলেননি রাহুল গাঁধীদের নিশানা করে নিজের ‘মনের কথা’ বুঝিয়ে দিতে। অমিত বলেন, ‘‘দেশে এমন পরিবেশ তৈরি করছেন, যেন সব লোক নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন। আরে রাহুল বাবা, মাইকে বলা এক কথা, কিন্তু একবার মহল্লায় নেমে দেখুন, জেনে যাবেন জনতা কার সঙ্গে।’’ অমিত এই ‘রাহুল বাবা’ অর্থাৎ রাহুল গাঁধী এখন কোথায়, তার কোনও ঠিকানা নেই। তিনি আদৌ মহল্লায় নামতে চান কি না, তা নিয়ে কংগ্রেসের অনেকের মধ্যেই বিস্তর সংশয় রয়েছে। কিন্তু রোজ ‘রাহুল বাবা’ আর প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার নাম করেই আক্রমণ করে যাচ্ছেন অমিত। জেএনইউয়ের ঘটনার আগে, পরেও।

বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী-অমিতের তত্ত্বাবধানেই হামলাকারীরা বাইরে থেকে জেএনইউয়ে ঢুকেছিল। হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে বিজেপি ও সঙ্ঘের স্থানীয় নেতাদের চিহ্নিত করে নাম প্রকাশ করে দিয়েছে কংগ্রেস। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োগুলো সঙ্ঘের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। বিজেপি-আরএসএসের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এবিভিপি ও বামেদের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বিবাদ ছিলই। কিন্তু দলের ‘উপরওয়ালা’র নির্দেশেই বামেদের ‘শায়েস্তা’ করার কৌশল রচনা হয় স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে।

কিন্তু কেন? বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘জেএনইউ বামেদের রাজনৈতিক আখড়া। দেশে বাম রাজনীতি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়েই শুধু জীবিত তারা। সেখানেই বা বামেদের আধিপত্য থাকবে কেন?’’ এ তো ঘরোয়া কথা। প্রকাশ্যেও বিজেপি নেতাদের কথায় এমন আভাস মিলছে। যেমন মোদীর মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘বাম ছাত্ররা জেএনইউয়ের বদনাম করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে গুন্ডামির আখড়া বানিয়ে ফেলেছেন।’’

প্রাক্তন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে, বলা ঠিক হবে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির আখড়া হওয়া উচিত নয়।’’ প্রকাশ জাভড়েকরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হিংসার জন্য কংগ্রেস, বাম, আপ-কে দায়ী করেছেন। জেএনইউয়ের প্রাক্তনী, বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর গত কালের ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরীত আখ্যা দিলেও আজ উল্টো সুরে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন পড়তাম, তখন টুকরে টুকরে গ্যাং দেখিনি।’’ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, বিজেপির এত জন মন্ত্রী যখন ঠিক করে ফেলেছেন যে যত দোষ বামেদেরই, তা হলে পুলিশের তদন্তে অন্য কথা আসবে কী করে?

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence Narendra Modi Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy