Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তালিকা দেড়শো জনের, মুখোশধারীরা অধরাই

শুধু গ্রেফতার নয়, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। পুলিশের এফআইআরে বলা হয়েছে, রবিবার বেলা পৌনে চারটে নাগাদ পেরিয়ার হোস্টেলে ৪০-৫০ জনের একটি দল ভাঙচুর চালায়।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০৪
Share: Save:

জেএনইউয়ে মুখোশধারীদের তাণ্ডবের প্রচুর ভিডিয়ো রয়েছে। তবু ৭২ ঘণ্টা পরেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। বরং যাঁরা মার খেয়েছেন, তাঁদের নাম উঠেছে দিল্লি পুলিশের এফআইআরে। ফলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীন দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মুখ বাঁচাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কয়েক জন মুখোশধারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু গ্রেফতার নয়, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। পুলিশের এফআইআরে বলা হয়েছে, রবিবার বেলা পৌনে চারটে নাগাদ পেরিয়ার হোস্টেলে ৪০-৫০ জনের একটি দল ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সাবরমতী হোস্টেলে ফের হামলা চালায় ৫০-৬০ জন। মাইকে ভাঙচুর থামানোর আবেদনে তারা থামেনি। প্রশ্নটা এখানেই। মারধর ও ভাঙচুর চলছে দেখেও পুলিশ মাইকে অনুনয় করে গেল! তাণ্ডব থামাতে এগিয়ে গেল না! হামলাকারীরা সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র বলেই কি? এই অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ।

অভিযুক্তরা কেন অধরা? পুলিশের যুক্তি, আগের দু’দিন সার্ভার রুমে ভাঙচুর হয়েছিল। তাই রবিবারের কোনও সিসি-ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়া যায়নি। বিক্ষোভকারীদের বাধা এড়াতে অনলাইনে পরীক্ষার জন্য নাম লেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সেই চেষ্টায় জন ঢালতে গত ৩ ও ৪ জানুয়ারি সার্ভার রুমে ভাঙচুর চালায় এক দল পড়ুয়া। তার কিছু ফুটেজ রয়েছে। সেই ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষের নামে এফআইআর করেছেন জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার বিশেষ তদন্তকারী দল

(সিট)-এর তরফে আজ খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। রবিবারের সংঘর্ষের কোনও তথ্য, ছবি ও ভিডিয়ো কারও কাছে থাকলে ৭ দিনের মধ্যে যোগাযোগ করার আবেদন জানিয়েছেন সিট-প্রধান ডিসিপি জয় তিরকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কিছু ফুটেজ জমাও পড়েছে ইতিমধ্যে। সেগুলির ফরেন্সিক বিশ্লেষণ চলছে। রবিবার দুপুর থেকে জেএনইউ চত্বরে মোবাইলে যে কথাবার্তা ও বার্তা চালাচালি হয়েছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দিনের শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, পুলিশ বেশ কিছু হামলাকারীকে চিহ্নিত করেছে। তারা কারা, কোন দলের সমর্থক, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্যাম্পাসে তিন দিন ধরে যে হামলা হয়েছে তাতে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫০ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে। অপরাধ দমন শাখার দল ইতিমধ্যেই পেরিয়ার হোস্টেলে গিয়ে এবিভিপি-র পড়ুয়াদের এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আগামিকাল ছাত্র সংসদের পদাধিকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে।

সিসি-ক্যাম চালু নেই। বিদ্যুৎও চলে গিয়েছে রহস্যজনক কারণে। তবু মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলতে পারে আক্রান্তেরা, সেই ভাবনা থেকেই মুখে কাপড় বেঁধে গিয়েছিল হামলাকারীরা। কিন্তু সেই ভিডিয়ো থেকেও গুন্ডাদের চিহ্নিত করা সম্ভব। এবং সেটাই ৭২ ঘণ্টাতেও হয়ে না-ওঠায় শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, এবিভিপি ও বিজেপির দিকে আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। অস্বস্তির চাপে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই গত কালই ‘ক্লিনচিট’ দিয়ে বলেছেন, ‘‘বিজেপি কর্মীরা এই ধরনের মারধর-ঝামেলা করতেই পারেন না। আর আজ সার্ভার রুমে হামলাকে পুলিশি ব্যর্থতার কারণ হিসেবে দেখান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘এ দেশে হিংসার স্থান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তো নয়ই। পরীক্ষার জন্য অধিকাংশ পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করালেও, কিছু ছাত্র সংগঠনের তাতে আপত্তি ছিল। তারা সার্ভার রুম নষ্ট করে দেয়। ভাঙচুর চালায়। কোনও পড়ুয়াকে নাম নথিভুক্ত করতে না-দেওয়াটা অশিক্ষিতের মতো পদক্ষেপ। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলে সব পক্ষের মুখোশধারীর মুখোশ খুলবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy