কাশ্মীরের কাঠুয়ায় তিন জন সাধারণ নাগরিককে খুনের পিছনে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (পিএমও) মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। তাঁর মতে, উপত্যকাকে অশান্ত করতেই জঙ্গিরা ওই খুনগুলি করছে। হত্যাকাণ্ডের পরে ওই কেন্দ্রশাসিত এলাকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সেখানে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোবিন্দ মোহন।
কাঠুয়ার মলহার এলাকা ইনছুর জঙ্গলে ২০ বছরের যশ, ৪০ বছর বয়সি দর্শন এবং বছর চোদ্দোর বরুণের মৃতদেহ উদ্ধার হয় গত কাল। একটি নদীতে ওই তিন জনের দেহ ভেসে যাচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতেরা সম্ভবত তুতোভাই। তাঁরা একটি বিয়ের শোভাযাত্রায় বিলওয়ারের দেহোটা গ্রাম থেকে মহলারের সুরাগ গ্রামে যাচ্ছিলেন গত বৃহস্পতিবার। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ওই তিন ব্যক্তি শোভাযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে যশ, দর্শন এবং বরুণ যে নিখোঁজ তা বুঝতে পারেন শোভাযাত্রার বাকি লোকজন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘বানি এলাকায় ওই তিন জনকে সন্ত্রাসবাদীরা যে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। শান্তিপূর্ণ এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার জন্য এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে’।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জম্মু গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আমজনতাকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে। তিনটি খুনের ঘটনায় এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক রামেশ্বর সিংহ কাল রাতে বিলওয়ার মহকুমা হাসপাতালে নিহতের পরিজনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কিছু লোক তাঁকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বিলওয়ার শহরে আজ বন্ধ ডাকা হয়েছিল। তার জেরে ওই এলাকায় ব্যাপক পুলিশ এবং আধাসেনা মোতায়েন করে প্রশাসন।
পুলিশি অপদার্থতার অভিযোগ তুলে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘‘কাঠুয়ার পরিস্থিতি গভীর ভাবে উদ্বেগজনক। অল্প সময়ের মধ্যে অন্তত এক ডজন মানুষ জীবন হারিয়েছেন। তাঁরা নিহত হয়েছেন পুলিশের গুলিতে বা গোরক্ষকদের হামলায়। গত কাল আরও তিনটি মৃতদেহ পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি চোদ্দো বছর বয়সি নাবালকও রয়েছে। এটা অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ঘটনা।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)