তিনি পক্ষে না বিপক্ষে?
মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী কি তা হলে বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় ৫১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধী? অরুণ জেটলি কি বিদেশি বিনিয়োগের বিরুদ্ধে?
কিন্তু প্রশ্ন হল— বিপক্ষে বলেও নিজের মনের কথা কি আদৌ তিনি বললেন?
বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপারে ক’দিন আগে ইউপিএ সরকারের নীতিকেই বহাল রাখার কথা বলেছিল মোদী সরকার। কিন্তু তা নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় গত কাল অরুণ জেটলি সংবাদ সংস্থার কাছে মন্তব্য করলেন— বিজেপি কোনও দিনই যে এটি সমর্থন করেনি, সেটি সকলেরই জানা।
জেটলির ঘনিষ্ঠরা কিন্তু বলছেন, আদ্যন্ত হিসেব কষেই এই মন্তব্য করেছেন প্রাজ্ঞ এই আইনজীবী। জেটলি এক বারও বলেননি তিনি বিদেশি বিনিয়োগের বিপক্ষে। বরং সুকৌশলে জানিয়ে দিলেন, তাঁর দল বিজেপি বরাবর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এসেছে। হতে পারে তা সঙ্ঘের নির্দেশ মানার বাধ্যবাধকতা থেকেই!
আর এখানেই তৈরি হয়েছে ধাঁধা। বিজেপি সমর্থিত যে ব্যবসায়িক সংগঠন সরকারের সিদ্ধান্তের পর বড়সড় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তারাও এখন ঠাওর করতে পারছে না— জেটলি আসলে বললেনটা কী!
নরেন্দ্র মোদীও একাধিক বার বুঝিয়ে দিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি বিদেশি বিনিয়োগের বিরুদ্ধে নন। অরুণ জেটলি যে বরাবরই বিদেশি বিনিয়োগের পক্ষে, সেটি তাঁর ঘনিষ্ঠরা ভালোই জানেন। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতে অর্থমন্ত্রী হিসেবেও অরুণ জেটলির একটি দায় রয়েছে। সংসদে পণ্য ও পরিষেবা বিল কোনও ভাবে আটকে যাক, সেটি তিনি চাননি। নিজের দলের নেতা এমনকী বিরোধীদেরও বার বার বলে এসেছেন— এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ভুল বার্তা যাবে।
সে কারণেই বিজেপির নেতারাও আজ বলছেন, ‘‘যে ভাবে সঙ্ঘের একাংশ ও বিজেপি সমর্থক ব্যবসায়ী সংগঠন আন্দোলনে নামছে, তাতে তাদের মন রাখার দায়ও আছে। এই দোটানার মধ্যে অর্থমন্ত্রী আসলে শুধু দলের অবস্থানটি আরও এক বার উদ্ধৃত করলেন মাত্র। না হলে মন থেকে তিনি বিদেশি বিনিয়োগের পক্ষেই।’’
কিন্তু প্রশ্ন সেখানেই শেষ হচ্ছে না। অনেকেই বলছেন, যদি দলের পুরনো অবস্থানটিই উদ্ধৃত করতে হত, তা হলে কেন্দ্রের এক মন্ত্রী কেন সেটা করলেন? কেন দলের সভাপতি অমিত শাহ কিংবা অন্য কোনও মুখপাত্রকে দিয়ে তা জানানো হল না? ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা প্রবীণ খান্ডেলওয়াল আজ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘অরুণ জেটলি বিজেপির নেতা। আবার কেন্দ্রের মন্ত্রীও। ফলে যখন তিনি এর বিরোধিতা করছেন, তাতে স্পষ্ট শুধু বিজেপি নয়— সরকারও এর বিরুদ্ধে।’’ খান্ডেলওয়ালের কথায়— যদি তাই হয়, তা হলে সরকার এই সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে না কেন? কেন অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে?
স্পষ্টীকরণ কিছুটা এসেছে বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছ থেকে। তিনি বলেছেন, ‘‘বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে ইউপিএ আমলে নেওয়া এই সংক্রান্ত যাবতীয় নীতিকে বহাল রাখার কারণেই। এটাও ঠিক যে, গত এক বছরে এই নীতি নিয়ে চলায় খুচরো ব্যবসায়ে একটিও বিদেশি বিনিয়োগের আবেদন আসেনি।’’ কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর কথার অর্থ অতি স্পষ্ট— বিজেপি যদি দলগত ভাবে এর বিরোধিতা করে চলে, তা হলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যে খুচরো ব্যবসায়ে বিনিয়োগ আসবে না।
প্রশ্ন হল— যদি এটিই সরকারের লক্ষ্য হয়, তা হলে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিচ্ছে না কেন তারা? নির্মলার জবাব, ‘‘আমাদের
সরকার নিশ্চয়ই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy